Hello there guest and welcome to InterfaithLovers - home of quality interfaith erotica!
To gain full access you must Register. Registration is free and it takes only a few moments to complete.
Already a member? Login here then!

অপুর কথা by cuck son [সংগৃহীত]

শেষ পর্যন্ত আমাদের যেতে হচ্ছে আব্বুর কাছে। আমার অবশ্য কোন সমস্যা নেই, আমি যেখানেই থাকি নিজের মতো থাকতে পারবো। কিন্তু আম্মু কে দেখে কষ্ট হয়। কেমন জানি একটা অসহায় ভাব আম্মুর চোখে মুখে সব সময় লেগে থাকে। মনে হচ্ছে আম্মু চাইছে কেউ যেন ওনাকে বাধা দেয় কেউ যেন আটকায়। কিন্তু কেউ আটকাচ্ছে না কেউ বাধা দিচ্ছে না। কি ধরনের মানসিক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে আম্মু সেটা চিন্তা করে আমার খুব খারাপ লাগছে। আসলেই কতটা অসহায় একজন নারী। হয়তো আজ লেখাপড়া বেশি জানা থাকলে অথবা স্বাবলম্বী হলে আম্মু কে এই অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হতো না।

নিজেকে আম্মু অবস্থানে রেখে চিন্তা করতেই গা শিউরে উঠছে আমার, কতটা অসহায় আম্মু। সবাই আম্মু কে আদর করছে সবাই আম্মুর কে না না ধরনের উপদেশ পরামর্শ দিচ্ছে। স্বামীর সাথেই থাকা যে স্ত্রীর কর্তব্য সেই ছবক দিচ্ছে। কিন্তু কেউ আম্মুর মনের অবস্থা চিন্তা করছে না। আম্মুর পানি টলমলে সজল চোখ জোড়া বার বার আকুতি করছে কেউ একজন বলুক যে জতে হবে না। কিন্তু এদের মাঝে কেউই সেই কেউ একজন হয়ে উঠতে পারছে না এমনকি আমিও না।

মনি বুড়ো সেদিন সন্ধ্যার পর থেকে আর এ বাড়িতে আসেনি। আমি অনেকবার গিয়েছি কিন্তু কোন সাড়া পাইনি ওর কাছ থেকে। অবাক হয়ে দেখেছি কি আশ্চর্য লোক ২২-২৩ বছর আগে করা কাজের জন্য এখন লজ্জিত হচ্ছে। আরে ব্যাটা তুই লজ্জিত হচ্ছিস আর এদিকে একজন কে সারাজীবন এর জন্য বনবাস যেতে হচ্ছে। আমি কিছুতেই ভেবে পাইনা কেন এমন করছে মনি বুড়ো। এরকম অতি প্রতিক্রিয়া কেন দেখাচ্ছে বুড়োটা। শালা কি সটকে পড়তে চাইছে ঝামেলা থেকে, তাই এমন ভাব করছে। নাহলে তো এমন করার কথা নয়। চুদেছে তো চুদেছে এখন এই নিয়ে এমন করার কি আছে। আর সে কি সুধু আমার নানি কে চুদেছে শিউলি আনটি কে চুদেছে এছাড়া আরও কতজন কে চুদেছে তার কি ঠিক আছে। অথচ এমন ভাব করছে যেন একেবারে সতী সাবিত্রীর পুরুষ সংস্করন।

বুড়ো আর আম্মুর এমন পুরনো দিনের মুভির নায়ক নাইকার মতো আচরনে বিরক্ত হয়ে আমিও হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু আজ আম্মুর মুখের দিকে তাকিয়ে আমি আর একবার শেষ চেষ্টা করার চিন্তা করলাম। নানা নানি ছাড়া এক মাত্র বুড়ো ই পারে আম্মুর এই নরক যাত্রা থেকে রক্ষা করতে।

বাক্স পেটারা গোছাচ্ছিল বুড়ো, সেও চলে যেতে চায় এখানে আর থকবে না। মাথায় রক্ত উঠে গেলো, এ কেমন আচরন আমি কিছুতেই বুড়োর এমন আচরনের কারন খুজে পাচ্ছি না।

-- নিজেকে কি সিনেমার নায়ক মনে করো? আমি আর না পেরে বলে ফেললাম।কিন্তু বুড়ো কোন উত্তর দিলো না তাই আরও মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো, আমি আবার বললাম

-- কি ব্যাপার কথা বলছ না কেন? কি হয়েছে এমন করে চলে জাওয়াই কি ভালো হবে? এতো না ভালোবাস খুকি কে? তোমার খুকির অবস্থা একবার দেখেছ, কেমন অসহায় ভাবে নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যেতে হচ্ছে তাকে। কেউ নেই যে বলবে না তোর ওই জায়গায় আর যেতে হবে না। কতটা অসহায় অবস্থায় আছে আমার আম্মু তুমি বুঝতে পারছ। তুমি চাইলেই এর মীমাংসা করতে পারো অথচ এমন ফালতু আচরন করছো, আসলে তুমি দায়িত্ব নিতে চাচ্ছ না আম্মু ঠিক ই বলে সবাই নিজ নিজ স্বার্থ নিয়ে আছে।

-- আমি কোন মুখ নিয়ে বলবো অপু? বুড়ো খুব ধীরে বলল

-- কেন তোমার এই প্যাঁচার মতো বুড়ো মুখ দিয়ে বলবে। বিদ্রুপ করে বললাম বুড়ো একটু হাসল এতে আমার রাগ আরও বেড়ে গেলো। আমার উপর যেন মিনা ভর করলো। আমি এক টানে বুড়োর হাত থেকে ব্যাগ ফেলে দিলাম বুড়ো অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালো।

-- শালা লুচ্চা বুড়া আমার আম্মু সাথে কম বয়সে ফুসলিয়ে প্রেম করতে পেরেছ এখন দায়িত্ব নেয়ার সময় পালিয়ে যাচ্ছ, শালা তুমি ভেবেছ কি আমি তোমাকে এমনি ছেড়ে দেবো শালা মজা যা নেয়ার নিয়ে নিয়েছো এখন পালিয়ে যাচ্ছ। তখন কচি মেয়ে পেয়ে খুব প্রেম করেছো এখন আমার আম্মুর বয়স হয়ে গেছে এক বাচ্চার মা হয়ে গেছে, অন্য জনের বউ হয়ে গেছে না?

নিজের বলা কথা গুলি শুনে আমি নিজেই অবাক হয়ে যাচ্ছিলাম। এমন মনে হচ্ছিলো যেন কথা গুলি আমি বলছি না, আমার মুখ দিয়ে মিনা বলছে।

-- অপু, খেঁকিয়ে উঠলো বুড়ো, নিজের মা সম্পর্কে এসব কথা বলতে তোর লজ্জা করে না।

-- ইস চোরের মুখে রাম নাম। নিজের মেয়ের বয়সী একজনের সাথে ওসব করতে লজ্জা হয়নি তোমার এখন আমাকে লজ্জা সেখায়।

-- যেমন বাপ তেমন ছেলে তো হবিই নিজের মা সম্পর্কে এমন বাজে কথা বলতে তোর আটকাচ্ছে না?

-- না আটকাচ্ছে না কারন আমার মা এক লুচ্চা বুড়ার খপ্পর থেকে আর এক খাটাশ এর খপ্পরে পড়ে নিজের জীবন নষ্ট করেছে তাই তার সম্পর্কে এসব বলাই যায়। যদি এর চেয়ে খারাপ কথাও বলতে হয় তাও বলবো, কিন্তু আম্মুর যাওয়া ঠেকাতে হবে, তুমি বুঝতে পারছো ঐ ঘটনার পর আম্মু ওখানে গেলে কি হবে?

আমি কথা গুলি বলে দম নেয়ার জন্য থামলাম, আমি থামতেই বুড়ো আবার খেঁকিয়ে উঠলো তারপর আবার নিজে থেকে একটু শান্ত হয়ে বলল

-- দেখ অপু তুই বুঝবি না আমার যে কি লজ্জা লাগছে তোর মায়ের সামনে গিয়ে দাড়াতে। মনে হচ্ছে তোর মায়ের সামনে গিয়ে দাঁড়ানর চেয়ে মড়ে যাওয়া সহজ হবে। এতদিন আমি ভাবতাম তোর মা কে তোর বাবা ফুসলিয়ে নিয়ে চলে গেছে আর তোর মা আমি বুড়ো বলে আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলো। তোর কাছে যখন সত্য জানতে পারলাম তখন আমার আর সাহস হয়নি তোর মায়ের কাছে গিয়ে দাড়াতে।

-- ইস আমার লজ্জাবতী যতটা সতিপনা তুমি দেখাচ্ছ ততটা সতী যদি তুমি হতে তাহলে যাকে নিজের মেয়ের মতো পেলে পুষে বড় করেছো তার দিকে লালসার দৃষ্টিতে তাকাতে পারতে না। এখন আবার লজ্জার দোহাই দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছ।

বুড়ো পুরো রেগে গেলো মনে হচ্ছে আমাকে মারবে এখন। রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বলল

-- অনেক সহ্য করেছি আর একটা বাজে বলবি এক থাপ্পড় মেরে সব দাঁত ফেলে দেবো

-- জাহান্নামে যাও আমার আম্মু কে আমি ই দেখে রাখবো

এটা বলে আমি বেড়িয়ে এলাম বুড়োর ঘর থেকে। জীবনে আমার এতো রাগ হয়নি আজ যেমন হচ্ছে। ইচ্ছে করছিলো বুড়ো কে মারি। রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে আমি পুকুর ঘাটে এসে বসে রইলাম। আগামিকাল আমাদের চলে যেতে হবে, কিন্তু কিছুতেই আমার মন সায় দিচ্ছে না। না আমার জন্য নয় আমার সবচেয়ে কাছের মানুষ আম্মুর জন্য।

সারাটা বিকেল পুকুর ঘাটে বসে থেকে আমি সন্ধ্যার কিছু আগে বাড়ি ফিরলাম। দেখি রাজু আর মতিন কি নিয়ে যেন তর্ক করছে। আমাকে দেখেই থেমে গেলো। রাজু আমাকে ইশারা করে কাছে ডাকল। আমি যেতেই বলল

-- অপু তুই সব জানার পর ও ফুপি কে যেতে বারণ করছিস না কেন?

-- আমি করেছি কিন্তু আম্মু আমার কথা শুনে না, আর বাড়ির সবাই যখন বলছে তখন জাওয়াই মনে হয় ভালো হবে।

রাজু কে একটু ঠেশ দিয়ে বললাম, আসলে নানাজান নানিজান এর আচরণের রাগ রাজুর উপর দিয়ে তুল্লাম।

-- কি বলছিস তুই অপু তোর বাবা লোক কত খারাপ তুইতো দেখছিস তারপর ও। রাজু অবাক হয়ে বলল

-- বড়দের ব্যাপারে আমাদের নাক গলানো ঠিক হবে না ওরা যা সিদ্ধান্ত নেয় তাই ভালো হবে।

রাজু আমার দিকে ফ্যালফ্যাল করে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো তারপর দাতে দাঁত ঘষে বলল

--তুই ও তোর বাবার মতো তোদের কাছে ফুপির কোন মূল্য নেই।

-- না থাকলে নেই তাতে তোর কি, এমনিতেই আমার মেজাজ খারাপ ছিলো তার উপর রাজুর কথা শুনে আরও খারাপ হয়ে গেলো। রাজু এমন একটা ভাব করছে যেন আমার আম্মুর জন্য ওর চেয়ে বেশি দরদ কারো নেই। আসল ঘটনা তো আমি জানি ও সুধু আম্মু কে পাওয়ার জন্য এসব করছে। আর ঘটনার সুত্রপাত তো ও নিজেই করেছে।

-- অপু ঠিক ই বলেছে বড়রা যা সিদ্ধান্ত নেয় তাই আমাদের মেনে নেয়া উচিৎ না হয় আরও ঝামেলা হবে। মাঝখানে মতিন বলল

আমি আর ওদিকে দাঁড়ালাম না, সোজা আম্মুর ঘরে চলে এলাম যা ভেবেছিলাম তাই আম্মু জানালার পাশে বসে বাইরে তাকানো। আমি যে ঘরে ঢুকেছি সেটা লক্ষ্য করেনি। মনটা খারাপ হয়ে গেলো আমার, মনে মনে ভাবতে লাগলাম এই সমাজ এমন কেনো? একটা লোক খারাপ জেনেও কেন মানুষ নিজের মেয়েকে আবার সেই লোকের কাছে পাঠায়।
 
বিছানায় শুয়ে আছি কিন্তু ঘুম হচ্ছে না একদম, খালি এপাশ ওপাশ করেছি। মনের মাঝে খালি একটাই চিন্তা আগামিকাল দুপুর ১২.৩০ মিনিট এর ট্রেন, ঐ ট্রেন আমাদের ঢাকা নিয়ে যাবে। খুব পরিচিত জায়গা, জ্ঞান হওয়ার পর থেকে ঐ বাড়িতেই ছিলাম, কিন্তু যেতে ইচ্ছে হচ্ছে না মনে হচ্ছে ঐ বাড়ি আমার অপরিচিত। আসলে যা ঘটেছে তার জন্য আমি অনেকটাই দায়ী, এখন আমার জন্য ই আম্মুকে এমন একটা প্রতিকুল পরিবেশে জীবন কাটাতে হবে। কেন যে আমি এমনটা করতে গেলাম,এই ভেবে খুব আফসোস হতে লাগলো। ভেবে ছিলাম নানা নানি কিছুতেই আম্মু কে ওখানে যেতে দেবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখলাম তার উল্টো, নিজেদের মান ইজ্জত এর জন্য আমাকে ওরা ঢাল হিসেবে ব্যাবহার করছে। বার বার আম্মু কে এই বলে বুঝিয়েছে যে আমার দিকে চেয়ে জেনো আম্মু আব্বুর সাথে সংসার করে।

পুরো ব্যাপারটা শুরু হয়েছিলো আমার মনের গভীরে লুকিয়ে থাকা একটা খুব অন্ধকার ফ্যান্টাসি থেকে, এই বাড়িতে এসে যখন জানতে পারলাম আমার মামাতো ভাই রাজু আম্মুর প্রতি দুর্বল, আর ও আম্মুর দিকে হাত বাড়াতে চায়, তখন আমি সিধান্ত নিলাম দেখি কি হয় রাজু কি সত্যি সত্যি কিছু করতে পারে কিনা। নিসচুপ থেকে পুরো ব্যাপারটার উপর চোখ রাখার সিধান্ত নিলাম। রাজু আর আম্মুর ব্যাপারটায় নজর রাখতে গিয়ে আমি দেখলাম যে এখানে এক জটিল সমিকরন আছে। এক বুড়ো যে আমার নানা বাড়িতে থাকে তার সাথে আম্মুর একটা পুরনো হিসেব নিকেস আছে। খেলাটা আমার পছন্দ হয়ে গেলো, তাই আমি নিজেও অংশ গ্রহন করার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমার সাথে যোগ দিলো মিনা নামের এক দস্যু মেয়ে।

রাজুর খেলায় অংশ গ্রহন করে অবশ্য আমার লাভ ই হলো। জীবনে প্রথম নারী দেহের স্বাদ পেলাম আমি। আমার মেজো মামির ছোট বোন এর কাছ থেকে। এর পর মিনার সাথে অদ্ভুত এক বন্ধুত্ব। এই মিনাই আমাকে একজন সচল খেলোয়াড় হিসেবে এই খেলায় অংশ গ্রহন করতে সাহায্য করেছে। আর আমিও মজা পেয়ে পরিনতির কথা চিন্তা না করে সব কিছু করেছি। এই খেলার সবচেয়ে প্রথম ভিক্টিম আমার বাবা, ফাঁদে পড়ে তার আসল চেহারা সবার সামনে উন্মুক্ত হয়ে গিয়েছে যা সুধু এখন পর্যন্ত আমার আম্মু ই জানত।

ধিরে ধিরে আমি আরও গভির কিছু রহস্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হই। বুড়ো লোকটার সাথে আম্মুর কি সম্পর্ক ছিলো। আবার আম্মু কেনই বা ঐ বুড়ো লোকটাকে ছেড়ে চলে যায় এই সব। যত জানতে পেরেছি ততই আমার কাছে মনে হয়েছে আম্মু এই বুড়ো লোকটাকেই ভালোবাসে। তাই ভেবেছিলাম আম্মু আব্বুর কাছ থেকে মুক্তি পেলে এই বুড়ো লোকটার কাছেই যাবে।

কিন্তু না, এখন দেখচি সমিকরন আরও জটিল। আমি এটাকে একটা খেলা মনে করেছিলাম, আর সেই ছেলে খেলা খেলতে গিয়ে, আমি আমার বাবা মায়ের সংসার ভেঙ্গেছি, আর এখন আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষটিকে আমি ঠেলে দিচ্ছি অন্ধকার ভবিষ্যতে। সমাজ নামে যে একটা ব্যাপার আছে, “মানুষ কি বলবে” এই তিনটা শব্দ যে মানুষের জীবনের চেয়েও বেশি দামি সেটা আমি ভুলেই গিয়েছিলাম।

এখন আম্মু যখন আবার আব্বুর কাছে ফিরে যাবে তখন নিশ্চয়ই আব্বু সেই রাতের প্রতিশোধ নেবে যে রাতে আম্মু আব্বু কে চড় মেরেছিলো। আর সেই প্রতিশোধ কেমন হবে সেটা ভাবতেই আমার গা শিউড়ে উঠেছে বার বার। সারাজীবন আমি আব্বু কে আম্মুর সাথে বাজে ব্যাবহার করতে দেখছি, আর এখন গিয়ে কি দেখবো সেটা আমার কল্পনায় ও আসছে না।

প্রায় সারা রাত বিছানায় ছটফট করলাম এসব ভাবতে ভাবতে। শেষে ভোরের দিকে ঘুমিয়ে গেলাম।

ঘুম ভেঙ্গে দেখি প্রায় সারে এগারোটা বাজে। অবাক হয়ে গেলাম কেউ আমাকে ডেকে তুলেনি দেখে। মনের মধ্যে একটা অসম্ভব চিন্তা উঁকি দিলো। তাহলে কি আমরা যাচ্ছি না ঢাকা ... মনে মনে ভাবলাম আমি। কিন্তু পরক্ষনেই সেই চিন্তা বাদ দিলাম। রাতের মধ্যে এমন কি হয়ে গেলো যে সিদ্ধান্ত উল্টে যাবে।

আমি ধিরে ধিরে বিছানা থেকে নামলাম, দেখলাম আমার আর আম্মুর সব জিনিস পত্র গোছ গাছ হয়ে গেছে। এখুনি হয়ত কেউ আমাকে ডেকে তুলতে আসবে। আমি ঘর থেকে বাইরে বেড়িয়ে বাথ্রুমের দিকে গেলাম। মুখে চোখে পানি দিয়ে বের হতেই আমার মেজো মামির সাথে দেখা।

- অপু তোমার ঘুম ভাংলো, আসো রান্না ঘরে আসো তোমাকে নাস্তা দিচ্ছি এই বলে মেজো মামি চলে গেলো

আমার নাস্তা খাওয়ার মুড ছিলো না, একটু পর চলে যাবো আর হয়ত কোনদিন আসা হবে না। তাই চিন্তা করলাম বাড়িটা একটু ঘুরে দেখি। বাড়ির উঠানে আসতেই রাজুর সাথে দেখা বেশ হাঁসি খুসি দেখাচ্চে ওকে। আমাকে দেখে একটা দাঁত বের করা হাঁসি দিলো। আমি অবাক এই রাজু ই তো গতকাল আমাকে কত কিছু বলল এখন দেঁতো ভেটকি দিচ্ছে ব্যাপার কি। আমি দালান ঘর থেকে বেড়িয়ে প্রথমে গেলাম সেই টিনের গুদাম ঘরের দিকে। এই ঘরটা আমার জীবনে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এই ঘরেই আমার ভারজিনিটি লস হয়েছে আবার এই ঘরেই আমার বাবা মায়ের সংসার ভেঙ্গেছে।

গুদাম ঘর থেকে বেড়িয়ে আমি গেলাম পুকুর পারের দিকে। সেখানে প্রায় মিনিট পাঁচেক বসে থাকলাম। একটু অবাক অবাক লাগছে কেউ আমার খোঁজ করছে না যে। প্রায় বারোটা বেজে গেছে, ট্রেন তো ধরতে পারবো না আমারা। তাহলে কি সত্যি সত্যি আমাদের যাওয়া কেন্সেল হয়ে গেছে। পুকুর পার থেকে আমি সরাসরি বাড়ি চলে এলাম। আম্মুর খোঁজ করতে লাগলাম। নানিজান এর ঘরে পাওয়া গেলো আম্মু কে, দুজনে বসে আছে, নানিজান আম্মুর মাথায় তেল দিয়ে দিচ্ছে। আমাকে দেখে আম্মু আর নানিজান দুজনেই একটু হাসল।

- এই তোর ঘুম ভাংলো। নাস্তা করেছিস? আম্মু জিজ্ঞাস করলো

আমি কিছুই বুঝতে পারছি না, গত কয়েক দিনের মাঝে এই প্রথম আম্মু কে হাসিখুশি দেখছি। আমি বললাম

- না করিনি, আর তুমি যে এখন তেল দিচ্ছ ট্রেন তো মিস হয়ে যাবে

উত্তর দিলো নানিজান বলল

- ট্রেন মিস হলে হোক, তোরা কোথাও জাচ্ছিস না,

নানিজান এর কথা শুনে আমার আনন্দে লাফিয়ে উঠতে ইচ্ছা হলো। কিন্তু বেশি আনন্দ দেখালাম না। আমি আম্মুর কাছে গিয়ে বসলাম, আম্মু মিটি মিটি হাসছে। কি সুন্দর যে লাগছে আম্মু কে, এই হাসিতে। যাক শেষ পর্যন্ত আমাদের পরিবার ভেঙ্গে গেলো মনে হয় এখন একটাই রাস্তা সেটা হচ্ছে আব্বু যদি এসে নিজের অপরাধ স্বীকার করে আম্মু কে নিয়ে যায়, তাহলে আমাদের পরিবার বেঁচে যাবে। কিন্তু সেটা হওয়া এতো সহজ নয়। তাই ধরে নেয়া যায় আমাদের পরিবার ভেঙ্গে গেছে, আমার এতে দুঃখ পাওয়ার কথা কিন্তু কেনো জানি এতে আমার আনন্দ হচ্ছে। আমার আম্মুর জন্য আনন্দ, আমি আম্মুর চেহারা দেখেই বলে দিতে পারছি আম্মু কতটা খুসি হয়েছে।

নিজে নিজের উপর ডেকে আনা বিপদ থেকে এতদিন পর মুক্তি পাচ্ছে বলে ভীষণ আনন্দ আজ আম্মুর মাঝে।এতদিন কাউকে মুখ ফুটে বলতে পারেনি কিন্তু আমি জানি আম্মু অনেক আগেই এই শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পেতে চাইতো।

আমি খুসি মনে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলাম, গেলাম মনি বুড়োর খোঁজে সেখানে গিয়ে দেখি ওনার ঘরে তালা ঝুলছে। ভাবলাম হয়ত বাইরে কোথাও গেছে। তাই আবার বাড়ির পথ ধরলাম, পথে আমার রাজু মতিন এর সাথে দেখা।

- কিরে পিচ্চি কই যাস? মতিন জিজ্ঞাস করলো

আজকাল পিচ্চি শব্দটা শুনলে আমার মাথায় রক্ত উঠে যায়, অপমানকর কথা সুধু মিনার মুখেই ভালো লাগে আমার। সুধু ভালো না বেশ সেক্সি লাগে, মিনা যখন আমায় গালি দেয় তখন আমার নুনুতে সুরসুরি ওঠে। কিন্তু আজ মন ভালো থাকায় মতিন কে কিছু বললাম না ভালো ভাবেই উত্তর দিলাম বললাম

- বাড়ির দিকে যাচ্ছি, তোরা কোথায় জাচ্ছিস দুই আহাম্মক

- আমারা পুকুরে গোসল করতে যাই, তুই যাবি? বলল রাজু

মনে মনে বললাম শালা তোমার মনে তো লাড্ডু ফুটছে। মুখে বললাম

- চল যাই একটু গোসল করেই আসি, তবে তোরা দারা আমি শরীরে তেল মেখে আসি বড় মামির কাছ থেকে

সেদিনের কথা মনে পড়ে গেলো আমার, যেদিন বড় মামি আমার শরীরে তেল মেখে দিয়েছিলো। যদিও বড় মামির প্রতি আমি তেমন আকর্ষণ বোধ করি না, কারন একটু বেশি ই মোটা উনি তবুও শরীরে যখন তেল মাখেন উনি তখন বেশ লাগে আর ওনার বড় বড় মাই দুটো ও বেশ দেখাজায়। রেনু আনটি কে চোদার পর আর মিনার সাথে কিছুদিন থাকার পর আমার এসব নিয়ে লজ্জা অনেক কেটে গেছে।

- ধুর তেল মাখে বুড়ো রা তুই কি বুড়া? রাজু আমাকে ব্যাঙ্গ করে বলল,

কিন্তু আমি ওর কোথায় কান দিলাম না, মনে মনে বললাম যা তোরা আমি তোর মায়ের দুদু দেখে আসি।

বড় মামি তরকারি কুটছিলেন, কিন্তু আমি একটু বায়না করতেই রাজি হয়ে গেলেন আমাকে বললেন

- অপু তুমি উঠানে যাও আমি তেল নিয়া আসি

আমি বড় মামির কথা শুনে উঠানে চলে গেলাম একেবারে উদলা গাঁয়ে দাড়িয়ে রইলাম শীতের সূর্যের নিচে পরনে সুধু শর্টস। বড় মামি নিজের বিশাল বক্ষ নাচাতে নাচাতে তেলের বাটি নিয়ে হাজির হলেন। এসে আমার সামনে বসে পরলেন। অইত হাঁটুর চাপে বুক দুটো ব্লাউজের গলা দিয়ে বেড়িয়ে আসতে চাইছে। প্রথমে উনি আমার পায়ের নিচের অংশে ডলে ডলে সরিষার তেল মাখতে লাগলেন। জোড়ে জোড়ে ডলার কারনে একটু একটু দুলছেন বড় মামি আর এতে ওনার কুমড়োর মতো দুধ দুটো ও বেশ দুলছে। আমি তেল মালিশ আর দুদু দেখার মজা দুটো এক সাথে নিতে লাগলাম। হাঁটুর নিচের অংশ যখন দেয়া হয়ে গেলো,আমি আমার শর্টস উপরে তুলে দিলাম, এতে আমার উরু পুরোটাই প্রায় অনাবৃত হয়ে গেলো। শর্টস টা প্রায় আন্ডার ওয়্যার এর মতো করে রেখছি আমি। বড় মামি এতে কিছুই মনে করলেন না উনি দুলে দুলে আমার উরু তে সরিষার তেল মালিশ করতে লাগলেন। ওনার মোটা মোটা আঙুল দুটো যখন আমার নুনুর কাছাকাছি চলে আসছে তখন নুনুতে এক দারুন সেনসেশন অনুভুত হচ্ছে আমার। নুনু পুরোপুরি শক্ত না হলেও বেশ টপকে টপকে উঠছিল। পায়ে দেয়া শেষ করে উনি আমার উদলা শরীরে তেল মালিশ করতে লাগলেন। যখন আমার তলপেট এর দিকে মালিশ করতে লাগলেন তখন বড় মামি একটু ঝুকে এলেন, তাতে ওনার আচল নিচে পড়ে গেলো। উনি তেমন কিছুই মনে করলেন না আপন মনে মালিশ করতে লাগলেন। আমার চোখের সামনে ওনার বিশাল দুদু দুটো দুলছে, আর আমি মন ভরে দেখছি

- ভাবি তোমাকে তো ভালো মতই পেয়েছে অপু

হঠাত আম্মুর গলা শুনে আমি দ্রুত মামির বুকের উপর থেকে চোখ সরিয়ে নিলাম, দেখি আম্মু দালান ঘরের গ্রিল দেয়া বারান্দায় দাড়িয়ে আছেন। আমি আম্মুর দিকে তাকিয়ে একটা অবুঝ বাচ্চাদের হাঁসি দিলাম। এদিকে বড় মামি নিজের কাজ ক্করতে করতেই বললেন

- তাতে কি হয়েছে, আর কয়টা দিন ই বা ও থাকবে

কথাটার মানে বুঝতে পারলাম না আমি। আর কয়দিন থাকবো মানে। তবে বেশি ভাবার সময় পেলাম না। আম্মু জিজ্ঞাস করলো তেল মেখাচ্ছি কেনো। আমি বললাম যে রাজু মতিন এর সাথে গোসল করবো পুকুরে। আম্মু কেও আসার জন্য বললাম তবে আম্মু রাজি হলো না।

ইতিমধ্যে আমার তেল মালিশ শেষ, শর্টস এর ভেতর নুনু অর্ধেক দাড়িয়ে আছে। আমি মনে মনে ভাবলাম পুরোটা দারালে ভালো হতো রাজু কে গিয়ে দেখাতাম। কিন্তু কি আর করা আমি পুরকুর পারে চলে এলাম। দেখি রাজু মতিন আগেই নেমে গেছে। টা আমিও আর দেরি করলাম না।

অনেক্ষন ধরে রইলাম আমি পুকুর এর পানিতে, গাঁয়ে সরিষার তেল মাখা থাকায় তেমন সমস্যা হচ্ছিলো না আমার। হঠাত রাজু বলল

-একা একা তোর বাপের সাথে থাকতে তোর সমস্যা হবে খুব তাইনা রে

- কি বলছিস, আমি কেনো ওখানে থাকবো, আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞাস করলাম রাজু কে? দেখলাম ওর চোখে মুখে একটা চাপা হাঁসি তবে চেহারায় একটা দুঃখী ভাব নিয়ে রেখছে।

- তুই জানিস না? মতিন অবাক হয়ে বলল

- কি জানি না? আমি জিজ্ঞাস করলাম

- তুই তো ঢাকা জাচ্ছিস আগামি সপ্তায়, তোর ক্লাস চালু হয়ে যাবে না? রাজু অনেক কষ্টে নিজের হাঁসি চেপে রেখছে।

মাথায় আমার বাজ পরলো। তাহলে কি বলির পাঁঠা আমি!!!!!!!

END of PART 1
 
Part 2

বেশ কিছুদিন আগে অপু নিজের মায়ের সাথে ট্রেনে করে নানা বাড়ি বেড়াতে আসে। খুব খুসি ছিলো অপু, অনেকদিন পর নানা বাড়ি যাওয়ার খুসি। তবে নানা বাড়ি ভ্রমণটা অপুর জন্য ছিলো অম্ল মধুর। অম্ল এই কারনে বলছি যে এই কয়দিনের ব্যাবধানে অপুর পরিবার আর আগের মতো নেই। আর মধুর বলছি এই কারনে যে অপুর মা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত বন্ধন থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পেরেছে। আর নিজের মায়ের এই মুক্তি অপুর জন্য অনেক বড় ব্যাপার। তবে শেষটা অপুর জন্য ভালো হয়নি, অপুকে এখন নানা বাড়ি ছেড়ে নিজের বাড়ি যেতে হবে তাও একা। চলুন তাহলে অপুর মুখেই শুনি।

ফিরতি পথে আমারা ট্রেনে নয় বাসে যাচ্ছি। আমারা মানে আমি আর মনি বুড়ো। কথা ছিলো ছোট মামা আমাকে নিয়ে যাবে, কিন্তু হঠাত করে এই বুড়ো এসে বলল ছোট মামা না উনি নিজেই আমাকে নিয়ে যাবে ঢাকা। আর বুড়োর উপরে তেমন কেউ কথা বলার নেই। তার উপর এইরকম ছোট খাটো ব্যাপারে কেউ বাধাই বা দেবে কেনো। নির্ধারিত দিনে রাতের বেলা বুড়ো ই আমাকে নিয়ে রওনা হলো।

কাজ হবেনা জেনেও আমি অনেক চেষ্টা করেছি, আম্মুকে অনেক বলেছি, নানিজান কে ধরেছি, বুড়ো শালা কেও বলেছি। কিন্তু কোন লাভ হয়নি, হবে না তা আমি জানতাম। কারন আমার মাধ্যমিক এর রেজিস্ট্রেশন ঢাকা থেকে করা। এখন আমি দশম শ্রেণীতে তাই চট্টগ্রাম এসে এখন রেজিস্ট্রেশন করার কোন উপায় নেই। আমাকে ঢাকা থেকেই পরিক্ষা দিতে হবে এর মানে আগামি প্রায় ১৫ মাস আমাকে ঢাকা থাকতে হবে আব্বুর সাথে। না জানি আব্বু আমার সাথে কেমন ব্যাবহার করে। অবশ্য আব্বু আমার সাথে কখনোই তেমন খারাপ ব্যাবহার করেনি। যা করার আম্মুর সাথেই করতো, ছেলে হিসেবে উনি আমাকে যথেষ্ট আদর করেন। তবে আমার ভয় হচ্ছে আমি কি আর ওনাকে আগের মতো মান্য করতে পারবো কিনা জানি না।

একটু ঘুমানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু ঘুম আসছে না, আমি সব সহ্য করতে পারি কিন্তু নাক ডাকা সহ্য হয় না। আর আমার পাশে বসে মনি বুড়ো নাক ডাকছে। খুব জোড়ে অবশ্য নয় কিন্ত তাতেই আমার ঘুম টাটা বাইবাই বলে বিদায় নিয়েছে। আমি বুড়োর দিকে তাকালাম, বুড়োর চেহারায় কেমন একটা প্রসান্তি ভাব। হবেই বা না কেনো কোন ক্রমে তো আম্মুর যাওয়া আটকাতে পেরেছে। তবে বুড়ার চেহারায় এমন শান্তি শান্তি ভাব আমার মনে খুব অশান্তি বাড়িয়ে দিচ্ছে। শালা আমাকে তো চলে যেতে হচ্ছে। যদিও কথা হয়েছে আমি ছুটিতে ওখানে থাকবো নানা বাড়ি। আর টেস্ট এর পর যে তিন মাস সময় আছে সেটাও আমি ঐ বাড়িতেই থকবো। তবুও আমার কিছু ভালো লাগছে না।

তবে বুড়ো কে ধন্যবাদ দিতেই হয়, আমিতো মনে করেছিলাম, বুড়ো পালিয়েছিলো, আসলে পালায় নি। আম্মু নানা বাড়িতে থেকে যাওয়ার পেছনে সবচেয়ে অবদান মনি দত্তের আর আমার নানির। অবশ্য এই দুইজনের জন্য ই আম্মুর আজ এই বেহাল দশা। বুড়ো নাকি ভোর বেলা এসেছিলো নানির কাছে, চুপি চুপি, দুই বুড়ো বুড়ি যে চুদাচুদি করেনি পুরনো দিনের মতো সেটা আমি নিশ্চিত তবে দুজনের মাঝে কি কথা হয়েছে বুড়ো আমাকে বলনি। তবে বুড়ো এমন একটা কিছু বলেছে যে নানিজান সেই কয়েক ঘণ্টার মাঝে আমার নানাজান কে বাধ্য করেছে মেয়েকে বাড়িতে রেখে দেয়ার জন্য। আর এখন বোঝা যাচ্ছে আম্মু নিজেও চাইছিলো তাকে জোড় করে রেখে দিক। আর নানাভাই যখন জোড় করে বল্লো তখন আম্মু ও না করলো না।

এক পর্যায়ে বুড়োর নাক ডাকা ও আমার চোখ দুটি খোলা রাখতে পারলো না। বাসের মৃদু দুলুনিতে ঘুমিয়ে গেলাম। ঘুম ভাংলো মনি বুড়োর ধাক্কায়

-- এই অপু ওঠা, আমরা এসে গেছি

আড়মোড়া ভেঙ্গে যখন চোখ খুললাম তখন দেখি ঢাকা শহর এখনো ঘুমন্ত। রাস্তায় কোন যানজট নেই, অল্প কিছু মানুষ রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করছে। আমার হার্ট বিট বেড়ে গেলো, তাহলে শেষ পর্যন্ত চলেই এলাম আমি। এই প্রথম কোথাও আম্মু কে ছাড়া থাকছি। কেমন জানি একটা খারাপ লাগা এসে চারদিক থেকে ঘিরে ধরলো আমাকে।

-- নেমে আয়,

মনি বুড়ো আমাকে তারা দিতে লাগলো। তাই আমার ব্যাগটা নামিয়ে নিয়ে আমি বাস থেকে নেমে গেলাম।

বাস থেকে নেমে আমরা একটা রিক্সা নিলাম, আমি আর বুড়ো পাশা পাসি সেই রিক্সায় বসে আছি, দুজনেই চুপ চাপ। একটু পর বুড়ো কথা বলে উঠলো

-- কি ব্যাপের তোকে তো কোনদিন এতো চুপচাপ থাকতে দেখিনি

আমি কোন উত্তর দিলাম না চুপ করেই রইলাম, কেন জানি এই বুড়োর উপর আর আম্মুর উপর রাগ হচ্ছে। এখন মনে হচ্ছে আম্মু চলে এলেই পারত। অন্তত এই একটা বছর এখানে থেকে আমার পরিক্ষার পর না হয় চলে যেতাম।

-- মন খারাপ করিস না মাত্র তো একটা বছর, এর পর তুই ওখানেই থাকবি।

বুড়ো মনেহয় আমার মন খারাপ ব্যাপারটা ধরতে পেরেছে, তাই সান্তনা দেয়ার চেষ্টা করলো। কিন্তু বুড়োর সান্তনা আমার কাছে ভালো লাগলো না। মনে হচ্ছে বুড়ো মনে মনে হাসছে আর বলছে ... কি এবার তোকেও সরিয়ে দিলাম দেখলি, এখন আমি আর খুকি, খুকি আর আমি হাহাহাহাহ।

-- তুই যদি সেদিন আমাকে অমন করে না বলতি তাহলে হয়ত আমি সাহস করে আর তোর মায়ের কাছে যেতাম না রে, এর জন্য তোকে ধন্যবাদ দিতে হয়। তুই একদম তোর বাবার মতো নোস, এতদিন আমি সুধু সুধু তোর উপর রাগ করেছি রে।

হ্যাঁ এখন তো বলবেই, তোমার পথ খালি করে দিয়ে এলাম যে, এখন আমার মতো ভালো মানুষ এই দুনিয়ায় আর কেউ নেই। মনে মনে বললাম আমি, এছাড়া আমি আরও একটি সদ্ধান্ত নিলাম সেটা হচ্ছে আমি আব্বুর কাছেই থাকবো। আর যাবো না ঐ খানে, ওরা যখন সুধু নিজেদের কথাই চিন্তা করলো থাকুক ওরা ওদের নিয়ে।

প্রায় আধ ঘণ্টা পর আমারা বাসার সামনে চলে এলাম। এতো পরিচিত বাসা কিন্তু দেখেই জানি কেন বুকের ভেতর টা ধক করে উঠলো। প্রচণ্ড কান্না পেতে লাগলো। এই বাড়ির মানুষ গুলি কেউ আমার পর না কিন্তু মনে হতে লাগলো আমি কি করে একা একা এখানে থাকবো।

-- শোন অপু, কষ্ট করে কয়টা দিন এখানে থেকে যা, মন খারাপ করিস না। আমি প্রতি মাসে ঢাকায় এসে তোর সাথে দেখা করবো। আর তোকে ছুটির সময় নিয়ে যাবো বুঝেছিস। আর নিজেকে শক্ত রাখবি, তুই ই তো চাইছিলো তোর মা জেনো এই বদমায়েশ লোকটার কাছ থেকে মুক্তি পায়। মনে করবি তোর এই একা থাকা সেই মক্তির জন্য লড়াই।

শেষ সময় বুড়ো আমাকে সান্তনা দিতে লাগলো। আরও নানা রকম সান্তনার কথা বলল বুড়ো, ভালো করে লেখা পড়া করার জন্য বলল। কিছু টাকা ও দিলো। মনে মনে ভাবলাম, বাহ আমার এই পরিনতির জন্য আমাকেই দায়ী করা হলো। বুড়ো এর পর আমার সাথে ভেতরে আসতে চাইলে আমি না করে দিলাম। ধিরে ধিরে আমি সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠলাম। নিজের বাড়িতে আসতে যে এমন দ্বিধা হবে সেটা আমি কোনদিন কল্পনা করিনি।

দরজা খুল্লো একটা মেয়ে, নিশ্চয়ই কাজের মেয়ে হবে। বয়স ২৫-২৬ হবে দেখতে কালো, কালো মানে অনেক কালো। আর বেশ স্বাস্থ্য বতি।

-- কারে চান?

আমাকে দেখেই জানতে চাইলো মেয়েটি। একটা ধাক্কার মতো খেলাম, আমাকে জিজ্ঞাস করছে “কারে চান”। এর উত্তর কি করে দেবো? আমি কি বলবো আমি জাকির উদ্দিন এর কাছে এসেছি। আমি তার ছেলে, যে ছেলে তার সংসার ভাঙ্গায় বিশাল বড় ভুমিকা রেখছে।

-- আমি অপু,

মিনমিন করে বললাম আমি, কিন্তু মেয়েটির ভাব ভঙ্গি দেখে মনে হলো সে আমাকে চেনে না। প্রস্নবোধক দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। এমন সময় দাদির গলা পেলাম,

-- সালেহা, কে আসছে, কার সাথে কথা বলো?

-- আম্মা অপু নামে একটা পোলা আইসে

-- ভেতরে আসতে দে হারামজাদী

ভেতর থেকেই আমার দাদি চেচিয়ে উঠলো। সালেহা নামক মেয়েটি আমাকে ভেতরে ঢুকতে দিলো। আমি ভেতর ঢুকতেই সালেহা দরজা বন্ধ করে দিলো, বিড়বিড় করে কি যেন বলছে, মনে হয় দাদি ওকে গালি দিয়েছে বলে রাগ করেছে। আমি হাতের ব্যাগ রেখে সোফায় বসে পড়লাম। মনে হচ্ছে আমার এই সোফায় ই বসা উচিত, ঘরের ভেতর নয়। আমি সোফায় বসতেই আমার দাদি কে দেখতে পেলাম।

-- ভাই তুমি আসছো? কি হইসে ভাই তোমার বাবা মায়ের? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না, তোমার আব্বু ও কিছু বলে না। তোমার মা নাকি কার সাথে থকবে, আর নাকি আসবে না।

মনটা খারাপ হয়ে গেলো, এই হচ্ছে আমার দাদি, এতো বয়স হয়েছে কিন্তু কথার কোন ছিঁড়ি নাই। আমি কোন উত্তর দিলাম না, চুপ করে রইলাম। দাদি এসে আমার পাশে বসলেন, আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন

-- এহ ভাই এই কয়দিনে তুমি কেমন শুকাইয়া গেছো, বাবা মায়ের অশান্তির ঝামেলা তোমারে পোহাতে হচ্ছে। এই বলে দাদি যেন আমার আম্মুর উদ্দেশ্যে বলতে লাগলো, ... আরে তোর সাথে তোর স্বামীর ঝগড়া হইসে, কিন্তু ছেলের যত্ন তো নিবি। এই ১৭-১৮ বছরেও কিছু শিখাতে পারলাম না। শিখাবো কি করে বাড়িতে যদি সিক্ষা না পায় তাহলে কি শ্বশুর বাড়ির সিক্ষা কাজে আসে।

আমি কোন প্রতিবাদ করলাম না, আমার কাছে বরং ভালোই লাগলো। আমি জানি এগুলি সব মিথ্যা অপবাদ কিন্তু এই মিথ্যা অপবাদ গুলি আমার মনে এক ধরনের শান্তি এনে দিচ্ছে। এমন সময় আব্বু বেড়িয়ে এলো

-- তোর আম্মু সত্যি সত্যি এলো না, কার সাথে এসেছিস

নিজেকে অবাক করে দিয়ে আমি মিথ্যা বললাম। বললাম

-- একা এসেছি

কেনো মিথ্যা বললাম জানি না। মুখ দিয়ে বেড়িয়ে গেলো আর বলে ফেললাম। মনে হয় আমার অবচেতন মন চাইছে এদের কাছ থেকে সহানুভুতি নেয়ার জন্য। ঠিক তাই হলো,আব্বু প্রচণ্ড রেগে গেলেন।

-- ঐ চরিত্রহীন মহিলা কত নিচে নামবে আর, নিজের হিন্দু প্রেমিক এর সাথে থাকার জন্য ছেলেকে একা একা এতদুর পাঠিয়ে দিয়েছে।

-- ও জাকির, কি বলছিস এই সব, হিন্দু প্রেমিক মানে?

আমার দাদি হাহাকার করে উঠলো

-- তুমি বুঝবে না মা চুপ থাকো, আমি ওদের দেখে নেবো সব কয়টাকে।

আব্বু রেগে বল্লো, তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বল্লো

-- তুই ঘরে যা, আর কোনদিন ঐ নষ্টা মেয়ে মানুষ এর মুখ দেখবি না, ও থাকুক ওর প্রেম পিরিত নিয়ে, তুই তো দেখলি তোর জন্য কোন মায়া নেই। যদি থকাতো তাহলে কি আর এভাবে থেকে যেতে পারত। ছেলে মেয়ের জন্য মেয়েরা কত কিছু করে, আর তোর মা কি করলো।

আমি ধিরে ধিরে নিজের ঘরে চলে গেলাম। ঘরে এসে এতক্ষণ বন্ধ হয়েথাকা ফুসফুস আবার সচল হলো জেনো আমার।
 
মাস দুই হলো আমি আমাদের বাড়ি এসেছি, আমার দাদি এখন পার্মানেন্ট ভাবে আমাদের সাথেই থাকেন। আমার তিন ফুপু আসেন নিয়মিত।ওনারা এলেই আম্মু কে নিয়ে বিষদ আলোচনা হয়। এর মাঝে আম্মুর পক্ষ থেকে ডিভোর্স পেপার চলে এসেছে। আব্বু খুব হুমকি ধামকি দিয়েছেন প্রথম প্রথম, আম্মুর নামে কেস করবেন, এই করবেন সেই করবেন। এরি মাঝে একবার আমার নানা বাড়ির এলাকায় ও গিয়েছিলেন। সেখানকার সম্মানিত বেক্তি দের কাছে আম্মুর নামে বিচার দিয়ে এসেছেন। কিন্তু আমার নানাজান এর প্রভাব অনেক বেশি থাকায় তেমন কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত আব্বু ডিভোর্স পেপারে সাইন করে দিয়েছেন। এরি মাধ্যমে আমাদের পরিবার অফিসিয়াল ভাবে শেষ হয়ে গিয়েছে।

আমার জীবন আর আগের মতো নেই, সকালে ঘুম থেকে তুলে দেয়ার মতো লোক নেই, একবারের বেশি দুইবার কেউ ডাক দেয় না। নাস্তাও মন মতো পাওয়া যায় না। প্রথম প্রথম দাদি খুব আদর করতো, এখন উনিও আমার অনেক আচরণে বিরক্ত। আমাকে সুধু আমার ফুপাত ভাই বোনের মতো হতে বলে। ওদের মতো ভালো রেজাল্ট কেন হয় না, ওদের মতো সকালে ঘুম থেকে কেনো উঠি না। এই সব কথা সব সময় আমাকে শুনতে হয়।

এছাড়া কথায় কথায় “মায়ের মতো হইসে “ কথাটা শুনতে হয় আমার। এছাড়া আমার প্রতিটি ভুল কাজের জন্য আম্মু কে দোষারোপ করা হয়। একদিন তো আমার দাদি আর ফুপুর গোপন কথা আমি শুনে ফেললাম। আমি আমার ঘরে বসে ছিলাম বিকেল বেলা। খুব খিধে পেয়েছিলো, আমি জানি সালেহা কে বলে লাভ হবে না। আমি কিছু করতে বললেই সালেহা নানা রকম কাজের বাহানা দেখায়। তাই আমি দাদির ঘরে যাচ্ছিলাম, তখন শুনতে পেলাম দাদি আর বড় ফুপির কথা।

দাদিঃ শুনলাম সে নাকি এক হিন্দু বুড়া লোকের সাথে প্রেম করতো ছিঃ ছিঃ ছিঃ

বড় ফুপিঃ ছিঃ ছিঃ এতদিন আমাদের বাড়ি একটা চরিত্রহীন নাপাক মেয়ে ছেলে ছিলো, ওর হাতের রান্না আমারা খেয়েছি, না জানি কত পাপ হইসে আমাদের।

দাদিঃ পুরান কথা না হয় বাদ দিলাম, দেখতো, ছেলেটকে আমাদের ঘাড়ে ফেলে রেখে কেমন দিব্বি প্রেম করছে পুরান নাগর এর সাথে।

বড় ফুপিঃ হুম মা, কেমন ঘেন্না হয় ঐ মাগীর কথা শুনলে, কত মেয়ে আছে ছেলে পুলের মুখের দিকে তাকিয়ে সারাজীবন একলা কাটিয়ে দেয়, আর এই মাগি, নিজের শরীর এর চাহিদার জন্য ছেলেকে দূরে পাঠিয়ে দিসে ছিঃ ছিঃ, আমার তো আগেই ঐ মাগীর চরিত্র নিয়া সন্দেহ হতো, দেখো না এক ছেলের মা দেখলে বোঝা যেত? কেমন খুকি সেজে থাকতো। আমি তো এই বাড়ি এলে আমার জামাই কে নিয়া টেনশন এ থাকতাম। বলা তো যায় না কখন কি করে বসতো, ঐ রকম বেশ্যা মাগীর কোন ঠিক আছে, এক নাগরে কি ওদের জীবন চলে।

দাদিঃ যাক এখন আর কোন ভয় নাই ঐ খানকী রে নিয়া,

বড় ফুপুঃ মা তোমার মনে আছে, ডলি কে যেদিন দেখতে আসলো সেই দিনের কথা ( ডলি আমার ছোট ফুপু)

দাদিঃ না তো কি হইসিলো?

বড় ফুপিঃ তোমার মনে নাই, ডলি কে যেদিন দেখতে আসলো ঐ মাগি কেমন ব্রা পইড়া নিজের দুধ দেখাইয়া বেরাইতেসিলো?

( এই জিনিস টা নিয়ে আমাদের বাড়িতে বড় সর একটা ঝগড়া হয়েছিলো,তখন আমার বয়স ছিলো কম তাই ঝগড়া কি নিয়ে হয়েছিলো তেমন কিছু বুঝি নাই, আম্মু নাকি সেদিন প্যাড যুক্ত পুস আপ ব্রা পড়ে ছিলো, এই নিয়ে আমার ছোট ফুপি অনেক বাজে বাজে কথা বলেছিলো )

দাদিঃ ওহ হ্যাঁ মনে পরসে, জাকির রে তো কোনদিন বুঝাইতে পারিনাই, ঐ মাগি একটা হারামি আসিলো।

চুপচাপ এইসব শুনতে শুনতে আমার খুব রাগ হচ্ছিলো, রাগ হচ্ছিলো নিজের উপর, আর আম্মুর উপর। আম্মুর উপর ক্যান রাগ হচ্ছিলো আমি জানি না। আজকাল আম্মুর কথা শুনতে আমার ভালো লাগে না। আসে পাশের লোক জন যেনে গেছে যে আমার আম্মুর সাথে আব্বুর ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে, এছাড়া আমার দাদির কল্যাণে আম্মুর চরিত্র সম্পর্কেও বেশ খারাপ ধারনা পেয়েছে ওরা। দাদা প্রচার করে বেরিয়েছে যে আম্মুর চরিত্র ভালো ছিলো না। এই জন্য ডিভোর্স হয়েছে।

এই কারনে আসে পাশের লোকজন কেমন করে জানি তাকায় আমার দিকে। আনটি বয়সি মহিলারা আমাকে দেখলে খালি জিজ্ঞাস করে আম্মু কেমন আছে, তারপর মুখ টিপে হাসে। আমার তখন খুব লজ্জা হয়। মনে হয় আমার এই লজ্জা জনক পরিস্থিতির জন্য আম্মু ই দায়ী, তাই আজ কাল আম্মুর কথা মনে হলে আমার রাগ হয়। আমার এখন মনে হয় আম্মু এখানে চলে এলেই ভালো হতো।

হ্যাঁ এটা সত্যি যে, আম্মুর ওখানে থেকে যাওয়ার পেছনে আমার বড় হাত আছে। কিন্তু আমি তো ছেলে মানুষ, আম্মু কি বোঝে না আমার কত কষ্ট হচ্ছে এখানে, কত লজ্জা হচ্ছে। আম্মু কেন আমাকে একা ছেড়ে দিলো আমাকে। এখানে আমি একা একা তীব্র মণও কষ্টের মাঝে দিয়ে যাচ্ছি আর ওখানে আম্মু সুখেই আছে, হয়ত রোজ নিজের পুরাতন প্রেমিক বুড়োর কোলে বসে দোল খাচ্ছে। এমন কি হয়ত রাজুর জোয়ান বাড়ার স্বাদ ও পেয়ে গেছে এতদিনে। যখন বসে বসে এসব ভাবি তখন আর কিছু ভালো লাগে না।

দিন দিন আমার মেজাজ ও তিরিক্ষি হয়ে যাচ্ছে, এ পর্যন্ত যা কোনদিন করিনি সেইটাই করে বসেছি একদিন। আমার স্কুল এর এক ছেলের সাথে ঝগড়া লেগে গিয়েছিলো, সেই ঝগড়া মারামারি পর্যন্ত গড়িয়েছে। ছেলেটি আমাদের এলাকায় ই থাকে, ওর সাথে আমার কোনদিন ভালো সম্পর্ক ছিলো না আমার খারপ সম্পর্ক ও ছিলো না। ও একটু গুন্ডা টাইপ বলে সব সময় এড়িয়ে চলতাম। একদিন আমি শুনলাম যে ও ক্লাসের আর এক ছেলের কাছে আমাদের বাড়ির ঘটনা বলছে, মনে হয় ওর মায়ের কাছ থেকে শুনেছে। আমার খুব রাগ হলো, আমি গিয়ে ওকে নিজের চরকায় তেল দিতে বললাম। আর তাতেই ও আমাকে খানকির ছেলে বলে গালি দিয়ে বসলো। আমারও খুব লাগলো গালি টা, রোজ রোজ আম্মু সম্পর্কে খারাপ কথা শুনতে শুনতে মনটা বিষিয়ে উঠেছিলো, তাই গিয়ে ওকে একটা ধাক্কা মেরে বসলাম। আর যাই কই,আমি হচ্ছি ছোট খাটো মানুষ, আর ঐ ছেলেটা বেশ শক্ত পোক্ত। বেদম মার দিলো আমাকে, আর সেই সাথে আম্মু সম্পর্কে বাজে বাজে সব কথা।

সেদিন এর পর থেকে স্কুলে যেতেও খুব লজ্জা হয় আমার, কারন স্কুলের সবাই যেনে গেছে যে আমার আম্মু আব্বুর ডিভোর্স হয়ে গেছে, কারন আমার আম্মু চরিত্রহীন। আমি জানি কথাটা কতটা মিথ্যা, কিন্তু একটা মিথ্যা কথাও বার বার শুনতে শুনতে সত্যি মনে হয়। আমাকে এখানে পাঠানো হয়েছিলো লেখা পড়া ঠিক মতো করার জন্য, এখন তার উল্টো হয়ে যাচ্ছে। লেখা পড়ায় মন বসে না একদম, স্কুলে যেতে লজ্জা হয়। প্রায় আমি স্কুল কামাই করে এদিক সেদিক ঘুরে বেরাই। একদিন ছোট চাচার হাতে ধরা খেয়ে গেলাম।

ইদানীং আমার স্কুলের একটা ছেলের সাথে বেশ বন্ধুত্ব হয়ে গেছে। সেদিন মার খাওয়ার পর ছেলেতাই আমার সাথে যেচে এসে বন্ধুত্ব করেছে। আমাদের ক্লাসের সব চেয়ে বাজে স্টুডেন্ট হচ্ছে এই ছেলেটা। ওর ও মা নেই, ভেগে গেছে ওকে ফেলে, ঘরে সৎ মা আছে, কেউ খোঁজ খবর নেয় না ওর। ওর নাম, পিক্লূ, একদিন ওর সাথেই সিনামা দেখতে গেলাম। আর অমনি ছোট চাচার সাথে দেখা। আমাকে কান ধরে বাড়ি নিয়ে গেলো। সে কি বেদম মার খেলাম আব্বুর হাতে।

জীবনে কোনদিন এমন মার খাইনি, আব্বু যেন আমাকে মেরে আম্মুর উপর শোধ নিচ্ছিলো। মারছিলো আমাকে আর গালি দিচ্ছিলো আম্মু কে। প্রথম দু চারটে আঘাত এর পর কেঁদেছিলাম, তারপর কান্না বন্ধ করে দিয়েছিলাম, মনে মনে ভেবে ছিলাম মারুক। যার মা থেকেও নেই তাকে তো মারবেই লোকে। এমন মার মেরেছিলো, যে তিনদিন স্কুলে যেতে পারিনি।

মাঝে একবার আম্মু কল করেছিলো। কিন্তু ভাগ্যবশত আব্বু কল রিসিভ করেছিলো, তাই আমাকে কথা বলতে দেয় নি। এমন ভাবেই দিন কাটছিলো আমার। যত দিন যাচ্ছিলো আম্মুর উপর আমার রাগ বাড়ছিলো। মাঝে মাঝে মনে হতো, আসলে আম্মুর উপর রাগ করার কিছু নেই, যাকে এতো ভালোবাসি তার জন্য এটুকু কষ্ট সহ্য করতে পারবো না। তখন মনে একটু শান্তি আসতো, কিন্তু সেই শান্তি বেশিদিন স্থায়ী হতো না। হয়ত আমার দাদির কোন কথা, নয়তো পড়শি দের আচরন আমাকে আবার আগের যায়গায় নিয়ে যেত। লেখা পড়া বন্ধ হয়ে যেত। এইত সেদিন সার্ট এর বোতাম ছিলো না বলে স্কুলে ৫ নাম্বার কাটা গেলো।

এর মাঝে আরও একটি বিশেষ ঘটনা লক্ষ করলাম। আমাদের কাজের মেয়ে সালেহা সে যে আমাকে তেমন পাত্তা দেয় না তার কারন খুঁজে পেয়ে গেলাম। সে আসলে আমাদের কাজের মেয়ে কম আব্বুর রক্ষিতা বেশি। কালো নাদুস নুদুস মেয়েটি রাতে আব্বুর সাথে ঘুমায়। এইত সেদিন আমার দাদির সাথেও চরম খারাপ আচরন করলো সালেহা কিন্তু আমার দাদি কিছুই বলতে পারলো না। উল্টো আব্বু দাদিকেই দোষারোপ করলো। কিন্তু লোক জানা জানির ভয়ে আমার দাদি চুপ রইলেন।

এর পর থেকে দাদি আব্বু কে বিয়ে করানোর জন্য উঠে পড়ে লেগছে। নানা যায়গায় পাত্রি খজা চলছে, কিন্তু আব্বু বিয়ে করতে নারাজ। এর জন্য আমার দাদি প্রায় বিলাপ করে কন্না করে। আমার দাদির বেশিরভাগ বিলাপ হয় আমার আম্মু কে গালি দিয়ে। অবশ্য ধিরে ধিরে এসব আমার সয়ে গেছে। আম্মু কে গালি দিলে আমার শরীরে এখন তেমন লাগে না। এমন কি স্কুলের ঐ ছেলেটাও আমাকে এখন খানকির ছেলে বলে ডাকে আমি মাইন্ড করি না।

--দোস্ত চলো সিনেমা দেইখা আসি

টিফিন এর সময় ডেস্কে মাথা রেখে আমার বিগত দুই মাস এর জীবন এর কথা বাছিলাম। কেমন ছিলো আমার জীবন আর কেমন হয়েছে এখন। না চাইতেই সব কিছু পাওয়া আমি এখন কোন কিছু চেয়েও পাই না। পরিস্কার পরিছন্নতার জন্য স্কুলে এক্সট্রা নাম্বার পাওয়া ছেলে আমি। আর এখন নিজের শার্ট এর গন্ধে নিজের ই বমি পাচ্ছে। গাব্বুর ডাকে মাথা তুল্লাম।

-- নারে সিনেমা দেখবো না, বড় বাজে শব্দ সিনামে হলের, আমার মাথা ব্যাথা করে। আসলে এখন কোন কিছু করতেই ইচ্ছা করছে না, নিজের বর্তমান সময় এর কথা ভেবে মনটা খুব খারাপ হয়ে আছে। ভেবেছিলাম আম্মুর সাথে সুখে শান্তিতে থাকবো, এখন দেখা যাচ্ছে আমাদের পরিবার ভাঙার ফলে সুধু আমি একাই কষ্টে আছি। এদিকে আব্বুও ভালো আছে, আর আম্মু ও নিশ্চয়ই কষ্টে নেই।

-- আরে ধুর বাল, আরও চারটা ক্লাস করতে হবে, চল না চলে যাই একা একা যেতে ভালো লাগে না। গাব্বু আবার বলল, আমি জানি যতক্ষণ আমি রাজি না হবো ততক্ষন গাব্বু ক্ষান্ত দেবে না। গাব্বুর সাথে বেশ দস্তি হয়ে গেছে আমার, হয়ত আমাদের দুজনের ভাগ্য এক রকম বলেই হয়ত। না হলে এতো কম সময়ে এতো গভির বন্ধুত্ব হয় না।

-- ঠিক আছে চল, আমি রাজি হয়ে গেলাম।

আমারা দুজন ব্যাগ কাঁধে নিয়ে দ্রুত পালানোর জায়গা দিয়ে স্কুল থেকে বেড়িয়ে গেলাম। স্কুল থেকে বেড়িয়ে আমারা সিঙ্গারা খেলাম। গাব্বুর নাম গাব্বু হওয়ার কারন হচ্ছে ও ভীষণ মোটা। আর খায় ও প্রচুর, ওকে কেউ টিফিন বানিয়ে দেয় না। তবে টাকা দেয়। আর সি টাকা দিয়ে খালি তৈলাক্ত জিনিস কিনে খায়।

সিঙ্গারা খাওয়া শেষে আমি বললাম

-- গাব্বু সিনেমা না দেখে অন্য কিছু করা যায় না, আমার সত্যি সত্যি সিনেমা দেখতে ইচ্ছা করছে না

-- তুই একটা বাল চোদা, আচ্ছা চল পার্ক এ যাই ঐখানে টিপা টিপি দেখা যায়।

আমি রাজি হয় গেলাম, সিনেমার ফালতু শব্দের চেয়ে পার্ক ভালো, যদিও আমার টিপাটিপি দেখারও কোন ইচ্ছা নেই।

স্কুলের পাশেই একটা পার্ক আছে, সেখানে ঢুকে গেলাম, তবে গাব্বুর দুর্ভাগ্য আজ তেমন কাপল নেই এখানে। দুই একজন যাও আছে তেমন কিছু করছে না তাঁরা। তাই আমরা এদিক সেদিক কিছুক্ষন ঘরাঘুরি করে একটা যায়গায় বসে পড়লাম। কিছুক্ষন বসে বসে গাব্বুর গালাগালি খেলাম আমি। তারপর আমি হঠাত জিজ্ঞাস করলাম

-- গাব্বু তোর মায়ের সাথে তোর দেখা হয়? কেন জানি হঠাত জানতে ইচ্ছা হলো। কিন্তু গাব্বু সাথে সাথে উত্তর দিলো না। কিছুক্ষন চুপ করে রইলো, তারপর বলল

-- আমি দেখি না তবে আমাকে দেখে

-- কিভাবে? আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞাস করলাম

-- স্কুলের সামনে প্রায় এক জন বোরখা পড়া মহিলা দেখি, কাউকে নিতে আসে না, খালি এমনি দারায়া থাকে। আমার সন্দেহ ওইটা আমার আম্মু।

আমার বুকের ভেতর টা মোচর দিয়ে উঠলো। গাব্বুর জন্য খুব মায়া হলো, আমি দুই মাসেই অস্থির হয়ে গেছি আর ও আজ প্রায় তিন বছর এমন করে থাকছে। মা ছাড়া থাকা যে কত কষ্ট সেটা তো আমি জানি। আর একটা বোরখা পড়া মহিলাকে নিজের মা ভেবে সান্তনা নিচ্ছে, হয়ত বা ওটা ওর মা নয়।

-- তোর দেখা করতে ইচ্ছা হয় না? আমি প্রস্ন করলাম

-- নাহ, হয় না, যে চলে গেছে তার সাথে দেখা করে কি হবে। গাব্বু একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলল

-- তোর মা কেন চলে গেছে রে, তোকে কি আদর করতো না?

-- আজাইরা ফালতু প্যাঁচাল পারবি না অপু, বললাম সিনেমা দেখি সেটা তো দেখলি না এখন ফালতু প্যাঁচাল পারিস। গাব্বু হঠাত রেগে গেলো। তাই আমি আর কিছু বললাম না, গাব্বুর অবস্থা আমার চেয়েও খারাপ এই ভেবে আমার মন কিছুটা সান্তনা পেলো।

-- আমি তখন ছোট ছিলাম, তাই আমি তেমন কিছু জানি না, আমার বাবা সৌদি থাকতো, সবাই বলে আমার মা, বাবার টাকা নিয়ে চলে গেছে আর একজনের সাথে। আর আমাকে ফেলে গেছে।

গাব্বু কে দেখে মনে হচ্ছে এখন কেঁদে ফেলবে। আমার ও ভীষণ কান্না পাচ্ছে। কান্না পাচ্ছে এই ভেবে যে আমি নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মেরেছি। গাব্বু তো কিছুই জানত না, ওর কোন দোষ নেই, আর আমার পরিস্থিতির জন্য আমি নিজে দায়ী।
 
দিন যত এগিয়ে যাচ্ছে গাব্বু ওরফে পিক্লুর সাথে আমার বন্ধুত্ব গভির হচ্ছে আর বাড়ির সাথে সম্পর্ক হালকা হচ্ছে। আমার সাথে আম্মুর যোগাযোগ বন্ধ, আব্বু সব ধরনের বেবস্থা নিয়েছেন এটা নিশ্চিত করার জন্য যেন আমি আম্মুর সাথে কোন সম্পর্ক না রাখতে পারি। আমাদের বারিতেও বেশ পরিবর্তন এসেছে, এখন বাড়িতে সুধু আমরা তিনজন, আমি আব্বু আর আমার নতুন মা নীলা। হ্যাঁ সালেহা কে আব্বু ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে। সাথে আমার দাদি কেও, দাদি কে অবশ্য ঘার ধাক্কা দেয়া হয়নি। তবে দেশের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে জোর পূর্বক।

আমাদের বাড়িতে নতুন মায়ের বয়স মাত্র ১৬ দিন। এর মাঝেই আমি বুঝে গেছি মহিলা অতান্ত চালাক, উনি আব্বুর সামনে আমার সাথে বেশ ভালো ব্যাবহার করেন, অবশ্য আব্বু না থাকলে খারাপ ব্যাবহার করে না, তবে আমাকে সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলেন, ভাব এমন যেন আমি বলতে এই বাড়িতে কোন মানুষ নেই। অবশ্য এতে আমার কোন সমস্যা নেই, আমি এখন নিজেকে নিয়েই থাকতে পছন্দ করি। ওহ হ্যাঁ গাব্বুর সাথেও। গাব্বু কে আমার এখন সবচেয়ে কাছের লোক মনে হয়।

মাঝে মাঝে যে আম্মুর কথা মনে পড়ে না এমন নয়। তবে সেটাকে আমি পাত্তা দেই না, যে মহিলা একবার খবর ও নিলো না তাকে মনে করে কি লাভ। কি ভেবেছিলাম আর কি হলো, হয়ত আমাকে ছাড়া জীবনে সে অভ্যস্ত হয়ে গেছে, হয়ত বুঝতে পেরেছে আমি থাকলে সে সুখি জীবন জাপন করতে পারবে না। তাই খুব চালাকির সাথে আমাকে নিজের জীবন থেকে বরখাস্ত করে দিয়েছে। তবে এসবে আমি এখন থোড়াই কেয়ার করি, গাব্বুর সাথে আমার দিন মাস্ত চলে যাচ্ছে। এইত সেদিন প্রথম সেমিস্টার পরিক্ষার রেজাল্ট দিলো আমি পেলাম B+। গাব্বু কে দিয়ে সাইন করিয়ে ফেরত দিয়ে দিয়েছি স্কুলে। আব্বু নিজের দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে ব্যাস্ত থাকায় আর জিজ্ঞাস করেনি। যাক বড় বাঁচা বেঁচে গেছি। নইলে হয়ত মার খেতে হতো।

আজ আমি আর গাব্বু যাচ্ছি এক বিশেষ মিশনে না সিনেমা দেখতে নয়। গাব্বু আমাকে এক বিশেষ যায়গায় নিয়ে যাচ্ছে। সেই বিশেষ জায়গা যে কি সেটা আমি জানি না এখনো। গাব্বু বলেছে সেখানে গিয়েই বলবে, এই বিশেষ যায়গায় যেতে হলে স্কুল ড্রেস পড়ে যাওয়া যাবে না, তাই আমি ব্যাগে করে একটা টি শার্ট নিয়ে এসেছিলাম সেটাই এখন পড়ে আছি। আমারা বাসে করে যাচ্ছি গাব্বু বসে আছে জানালার ধারের সিটে আমি বসে আছি ওর পাশের সিটে, একটা লোক আমার সিট ঘেঁষে দাঁড়ানো বিকট ঘামের গন্ধ আসছে লোকটার শরীর থেকে।

হঠাত আমার চোখ পড়লো সামনের দু সিট আগের একটা দৃশ্যের দিকে, একটা মহিলা সিটে বসে আছে, আর তার পাশে একটা লোক দাড়িয়ে, লোকটা বিনা কারনে বার বার নিজের ধোন মহিলার বাহুতে লাগিয়ে দিচ্ছে। দৃশ্য টা দেখে আমার মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। না ওই লোকটার উপর না, মেজাজ খারাপ হলো নিজের উপর, মনে পড়ে গেলো আমি আগে এইসব দৃশ্য কল্পনা করে কত উত্তেজিত হতাম। আর সেই সাথে রাগ হলো ওই মহিলার উপর, কেমন খারাপ মহিলা একটু প্রতিবাদ ও করছে না, খুব মজা পাচ্ছে, আসলে নারী জাত ই এমন ভাব নেয় এরা কত অবহেলিত, আসলে এসব একটা ফালতু পর্দা, যা দিয়ে এরা নিজেদের আসল রুপ ঢেকে রাখে, তলে তলে এরা হচ্ছে বদের হাড্ডি এরা এসব খুব এঞ্জয় করে।

-- কিরে কি দেখস? গাব্বু আমাকে সামনের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে জিজ্ঞাস করলো

-- কিছু না, আমি উত্তর দিলাম, তার পর কি ভবেবে জানি আমি সামনের দৃশ্য গাব্বুকে দেখালাম বললাম

-- দেখ ওই মাগি কেমন ধোনের ঘসা খেয়ে মজা নিচ্ছে

দৃশ্যটা দেখে গাব্বু ও খুব খুসি হলো যতক্ষণ ওই মহিলা ছিলো ততক্ষন আমারা দুই বন্ধু সেটা নিয়ে নানা রকম মজা করতে লাগলাম আর ওই মহিলা কে নিয়ে বাজে বাজে মন্তব্য করতে লাগলাম।

যখন আমাদের স্টপে চলে এলাম তখন গাব্বু আমাকে বলল

-- এই অপু নাম, চইলা আসছি

দ্রুত আমারা বাসের ভিড় ঠেলে নেমে গেলাম। বাস স্টপে নেমে গাব্বু প্রথমে দুটো আইসক্রিম কিনলো। বেশ গরম হওয়ায় আমিও না করলাম না। দুজনে আইসক্রিম নিয়ে খেতে খেতে হেঁটে একটা গলির ভেতরে ঢুকলাম। সেখান থেকে রিক্সা নিলো গাব্বু। রিক্সা থেকে এমন যায়গায় নামলাম যা একটা বস্তি এলাকা বলা যায়। সাড়ি সাড়ি বাশের বেড়ার ঘর সেখানে আর দোকান পাট প্রচুর। গাব্বু আমার কানে কানে বলল

-- বেশি এদিক সেদিক তাকাইস না, এলাকা ভালো না, আমার পেছন পেছন আয়।

আমি গাব্বুর দিকে অবাক হয়ে তাকালাম, এতক্ষণ আমার কিছু মনে হয়নি, কিন্তু গাব্বুর কথা শুনে বেশ ভয় ভয় লাগতে লাগলো। আসে পাশের লোকদের চাহনি কেমন ভয়ংকর লাগতে লাগলো। মনে হচ্ছে ওরা সবাই আমার দিকে কেমন কেমন করে জানি তাকাচ্ছে। ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে গেলো, আমি যেন যায়গায় জমে গেলাম। সেটা দেখে গাব্বু আমাকে এক প্রকার টেনে নিয়ে চলল। আর চাপা গলায় আমাকে গালিগালাজ করতে শুরু করলো।

আমারা ঝুপড়ি ঘর গুলির ভেতর দিয়ে হেঁটে চললাম, বেশ সরু হাঁটার রাস্তা। একজন হাঁটলে অন্য আর একজনের হাঁটার জায়গা থাকে না এমন। আর বেশ নোংরা, ড্রেন বলতে কিছু নেই এখানে, রাস্তার উপর দিয়েই ময়লা পানি চলছে, আবার সেখানে বসেই কোন শিশু টিনের থালায় ভাত খাচ্ছে, কেউবা আবার খেলা করছে। বুঝলাম এরা হচ্ছে ঢাকার নিম্ন আয়ের লোক, যাদের সাথে আমার পরিচয় নাই বললেই চলে। এরা আমার কাছে এলিয়েন, কিন্তু এটা বুঝতে পারছি না গাব্বু আমাকে এখানে কেনো নিয়ে এলো। এছাড়া এটাও বুঝতে পারছি যে এটা গাব্বুর জন্য নতুন কিছু না, যেভাবে ও গলির পর গলি দ্রুত পার করে যাচ্ছে তাতে বোঝা যায় ও আগেও এখানে এসেছে।

অবশেষে আমারা একটা ঝুপড়ি ঘরের সামনে এসে দাঁড়ালাম, দরজা দেয়া ঘরটার। অন্য ঘর গুলো থেকে একটু বড় মনে হচ্ছে। গাব্বু দরজায় টোকা দিলো ……

-- মরজিনা, আমি গাব্বু

একটু পর দরজা খুলে গেলো, দরজা খুলে দিলো একটা মেয়ে, ধবধবে ফর্সা, চুল গুলি লালচে মনে হয় অনেকদিন সেম্পু করে না। পরনে একটা বেশ পুরনো সাড়ি। আমাদের দেখেই হেঁসে বলল

-- পিক্লূ ভাই কিমুন আছেন? লগে এইটা কে?

-- আমার দোস্ত, নিয়া আসলাম। এই বলে গাব্বু ঘরের ভেতর ঢুকে গেলো।

আমি কিছুই বুঝতে পারছি না, গাব্বু এখনে কেনো এলো, আর এই ঘরের ভেতর ই বা কেন ঢুকছে। আমি বাইরেই দাড়িয়ে রইলাম, সেটা দেখে গাব্বু আমাকে বলল

-- বাইরে দাড়িয়ে রইলি কেনো ভেতরে আয়।

-- সরম পায় হি হি হি, মেয়েটি খিল খিল করে হেঁসে ফেলল। মেয়েটির হাঁসি কে পাত্তা না দিয়ে গাব্বু আমাকে বলল

-- আয় ভেতরে আয়,

আমি এদিক সেদিক তাকিয়ে ভেতর ঢুকলাম, ঝুপড়ি ঘর বাঁশের বেড়া আর টিনের চাল, আর সেই চাল অনেক নিচু তাই প্রচুর গরম, আমার কাছে মনে হলো যেন অভেন এ ঢুকে গেছি। ঘরের মেঝে মাটির, আসবাব তেমন নেই একটা বাঁশের সেলফ তাতে হাড়ি পাতিল রাখা আর আছে একটা বিশাল চৌকি। সেই চৌকিতে একটা কালো দেখতে ছেলে ঘুমিয়ে, দেখে মনে হচ্ছে বয়স ৮-৯ হবে, হাত পা গুলি লিকলিকে আর বুকটা হাপরের মতো ওঠা নামা করছে।

-- বহেন, মেয়েটা আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল, আমি মেয়েটার দিকে তাকালাম ভালো করে। দেখতে সুন্দর ই তবে পরিচর্যার অভাব। বেশ চিকন আর লম্বা বয়স বোঝার উপায় নেই।

-- কিরে বস

গাব্বু আমাকে তাগিদ দিলো, ও নিজে ওর বিশাল শরীর নিয়ে চৌকিতে বসে পড়েছে। আমিও বসে পড়লাম। মেয়েটি আমাকে বসতে দেখে বেড়িয়ে গেলো ঘর থেকে। আর মেয়েটি বেড়িয়ে যেতেই আমি গাব্বুর দিকে জিজ্ঞাসু চোখে তাকালাম। গাব্বুর মুখে বেশ বড় সর হাঁসি,আমাকে বলল

-- কোনদিন চুদেছিস শালা, আজকে তোকে চোদন খেলা সেখাবো। এই হচ্ছে মরজিনা আমাদের বাড়ি আগে কাজ করতো এখন আর কাজ করে না এই ব্যাবসা করে, আমি এর আগেও এসেছি, তোকে বলি নাই, কি না কি মনে করিস তুই তো আবার ভালো ছেলে।

গাব্বুর কথা শুনে আমার মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো, এতদুর নিয়ে এসেছে আমাকে এই জন্য। আমি রেগে গিয়ে বললাম

-- দরকার নাই আমার চোদন খেলা খেলার, চল এখান থেকে এই যায়গায় আমি থাকবো না আর এক মুহূর্ত।

-- কেনো রে মরজিনা বস্তির মাল হলেও চুদে ভালো, আর হাই ক্লাস মাগি পাবি কই বল। গাব্বু হাসতে হসাতে বলল।

-- হাই ফাই বুঝি না এখন চল, আমি গাব্বু কে তাড়া দিতে লাগলাম। কিন্তু গাব্বু উঠবে না, শেষে আমাকে বলল ও না চুদে যাবে না আমি চাইলে বাইরে গিয়ে দাড়াতে পারি।

আমি পড়লাম বিপদে এই এলাকায় বাইরে গিয়ে দাঁড়ানোর সাহস আমার নাই। তার উপর আমার কাছে ফিরে যাওয়ার টাকা ও নেই। আমাকে বাসা থেকে টাকা দেয়া হয় না। যতটুকু রিক্সা ভারা লাগে সুধু তাই দেয়া হয়। আর যে অলি গলি তস্য গলি পেরিয়ে এসেছি তাতে আমার পক্ষে রাস্তা চিনে যাওয়া ও সম্ভব না।

গাব্বু মনে হয় আমার মনের কথা বুঝতে পারলো, তাই বলল .........

-- দেখ ভাই তোর মনে না চাইলে করিস না কিন্তু আমার মজাটা নষ্ট করিস না, মাসে একবার আসি।

আমার আর কিছু করার নেই, এখানে বসে থাকা ছাড়া। তাই আমি বসে পড়লাম। এক পাশের দেয়াল জুড়ে একটা দড়ি আড়াআড়ি করে বাধা তাতে কাপড় ঝুলিয়ে রাখা, কিছু সালোয়ার কামিজ কিছু পুরনো সাড়ি, কয়েকটা হাপ প্যান্ট আর দুটো লুঙ্গী ঝুলিয়ে রাখা সেখানে। লুঙ্গী ঝুলে থাকতে দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম, এই ঘরে কি কোন পুরুষ মানুষ ও আছে নাকি। গাব্বু কে জিজ্ঞাস করতে যাবো এমন সময় মেয়েটি ঘরে প্রবেশ করলো। হাতে একটা প্যাকেট, প্লাস্টিক এর প্যাকেট হওয়ায় ভেতর কল্ড ড্রিঙ্কস এর বোতল দেখা যাচ্ছে। সাথে একটা চানাচুর আর একটা কাগজ এর প্যাকেট।

--- পিক্লু ভাই বন্দধু নিয়া আইসেন খুসি হইসি, কিন্তু রেট জানেন তো? একটা কাচের গ্লাস নিজের ওড়না দিয়ে মুছতে মুছতে জিজ্ঞাস করলো মেয়েটি।

-- মরজিনা আপা তুমি আমার সাথে রেট নিয়া কথা বলবা? পিক্লু একটু অবাক হওয়ার ভান করলো

-- ধান্দা ধান্দার যায়গায় খাতির খাতিরের যায়গায়, এই যে আপনেরে কোক আর চানাচুর খাওয়াই সেইটা হইলো খাতির তাই বইলা ধান্দা তে কোন খাতির নাই। এই বলে মেয়েটি আমার দিকে গ্লাস বাড়িয়ে দিলো। আমি গ্লাস দ্রুত নিয়ে নিলাম, তারপর ঢক ঢক করে গিলে ফেললাম ঠাণ্ডা পানিয়। কারনে গরমে আমি অস্থির হয়ে যাচ্ছিলাম, তাই ময়লা ওড়না দিয়ে মোছা গ্লাস আমাকে তেমন ভাবালো না।

-- মরজিনা আপা একটা স্টিক দেও, গাব্বু চৌকিতে শোয়া ছেলেটির পাশেই আধ শোয়া হয়ে বসে বলল। স্টিক যে কি জিনিস সেটা আমি বুঝলাম না।

-- ঐসব এ কাম নাই, গেলো বার বুমি কইরা ভাসাইছো সব, তোমার সহ্য হয় না

-- ধুর ওইটা প্রথবার ছিলো বলে এবার হবে না, স্টিক হলে জমে ভালো।

-- দেইখো আবার, এই বলে মেয়েটি একটা সিগারেট বের করে দিলো গাব্বুর দিকে। আমি গাব্বু কে কখনো সিগারেট খেতে দেখিনি।

গাব্বু যেই সিগারেট ধরাতে যাবে তখন মেয়েটি বাধা দিলো, তারপর বিছানায় শোয়া ছেলেটিকে ডাকতে লাগলো,

-- ও সুরুজ, ও বাজান ওঠ তো,

এটা মেয়েটির ছেলে এই প্রথম বুঝতে পারলাম আমি। বোঝার পর একটা শক খেলাম, প্রথমত মেয়েটিকে দেখলে মনে হয় না ওর এতবর ছেলে আছে, আর দ্বিতীয়ত এই কাজ মেয়েটি ছেলের সামনেই করে এই ভেবে। এখন না হয় ছোট যখন বড় হবে তখন? ছেলেটিও কি আমার মতো নিজের মা কে অন্য লোকের সাথে দেখে আনন্দ পাবে নাকি, মাকে ফেলে রেখে ঘেন্নায় চলে যাবে।

-- দেখ মামা আইসে, তোর লইগা চকলেট আনছে, ওঠ

সুরুজ কে বাইরে পাঠিয়ে দেয়া হলো। আমার মাথায় তখন ওই এক চিন্তাই ঘুরছে, এই ছেলে কি বড় হয়ে মায়ের এই ধান্ধা বেড়ার ফাঁকে চোখ রেখে দেখবে নাকি ঘেন্নায় চলে যাবে। এদিকে সুরজ চলে যেতে মেয়েটি ( নাকি মহিলা বলবো বুঝতে পারছি না) দরজা লাগিয়ে দিলো। দরজা লাগানো হতেই গাব্বু সিগারেট ধরালো, উফফ কি বিশ্রী গন্ধ, এর আগেও আমি সিগারেট এর গন্ধ পেয়েছি, কিন্তু এর গন্ধ অনেক ঝাঁঝালো। হয়ত বদ্ধ ঘর বলে। আমি আর সহ্য করতে পারছিলাম না। এর মাঝে গাব্বু মহিলাকে দুটো পাঁচশো টাকার নোট বের করে দিলো। মহিলা সেটা একটা ব্যাগে রেখে নিজের সাড়ি খোলা শুরু করলো।

আমি এক মনে মহিলার সাড়ি খোলা দেখতে লাগলাম, মহিলা যেমন চিকন তার বুক ও তেমন ছোট। একেবারে চিমসানো আর ঝোলা এরিওলা দুটো বিশাল বিশাল। একে একে মহিলা নিজের সব কাপড় খুলে ফেলল সুধু পেটিকোট বাদে, মহিলার তোল পেটের চামড়া থুবড়ে আছে। অনেক চিকন বলে হয়ত আর অনেক ফাটা দাগ। রেনু খালার পেতেও ছিলো কিনতি এতো বেশি ছিলো না। আর রেনু খালার পেট এমন তোবড়ানো ছিলো না।

-- আগে তুই যাবি না আমি?

গাব্বুর প্রস্নে আমার হুস ফিরলো, আমি সুধু একটা হু ছাড়া আর কিছুই বললাম না। আসলে এই মহিলা কে দেখে আমার নিজের মায়ের কথা আর আমার ফ্যান্টাসির কথা মনে পড়ে গেছে।এমি কি এমনটাই চেয়েছিলাম? এমন দৃশ্য কি আমার পক্ষে দেখা সম্ভব? এসব চিন্তা আমার মাথায় ঘুরতে লাগলো।

-- আচ্ছা তুই প্রথম দেখ কিভাবে করতে হয়, তারপর করিস এই বলে গাব্বু নিজের বিশাল বপু থেকে জামা কাপড় খুলতে লাগলো। এমন নয় যে আমি এর আগে নেংটো ছেলে দেখিনি, রাজু আর মতিন কে দেখছি, আমার সামনেই ওরা নেংটো ছিলো। কিন্তু আজ কেমন জানি অস্বস্তি হচ্ছে। সেই আমি আর আজ আমি মনে হচ্ছে এক নই।

মরজিনা গাব্বুকে কাগজ এর প্যাকেট থেকে একটা প্যাকেট বের করে দিলো, দেখেই চিনতে পারলাম এটা কনডম। আমার যে দুবার সেক্স এর অভিজ্ঞতা হয়ে দুবার ই কনডম ছাড়া। গাব্বু কনডম এর প্যাকেট বিছানায় রেখে, মরজিনাকে চুমু খেতে শুরু করলো, আমি মন্ত্র মুগ্ধের মতো সেদিকে তাকিয়ে রইলাম, গাব্বুর বিশাল শরীরে যেন হারিয়ে গেলো মরজিনার জীর্ণ শরীর। একটা জিনিস খেয়াল করলাম মরজিনার শরীর এর যে অংশ গুলি ঢাকা থাকে সেগুলি কাঁচা হলুদ এর মতো ফর্সা।

গাব্বু হাভাতের মতো পিষে যাচ্ছে মরজিনার চিমসানো মাই দুটো, আর রাক্ষস এর মতো চুসছে মরজিনার ঠোট। এক পর্যায়ে গাব্বু বিছানায় বসে মরজিনাকে অনুরধ করতে লাগলো, নিজের ধোন চুষে দেয়ার জন্য, কিন্তু মরজিনা কিছুতেই রাজি না। বলল

-- এইসব চুষা চুসির মাইদ্দে আমি নাই,

গাব্বুর শেষে আশাহত হয়ে নিজের উত্থিত লিঙ্গে কনডম পড়ে নিলো। মরজিনা কে বিছানয় সুইয়ে দু পা ফাঁক করে দিলো, তারপর নিজের বিশাল শরীর ওই জীর্ণ শরীর এর উপর চাপিয়ে, কিছুক্ষনের জন্য নাড়িয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়লো। এই পুরোটা সময় আমি যেন সুরুজ হয়ে গেলাম আর মরজিনা আমার মা। কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম আমি কোন উত্তেজনা ফিল করলাম না।

গাব্বু যখন উঠে আমাকে মরজিনার তেল চিটচিটে যোনির দিকে ইশারা করলো তখন যেন আমার বমি পেলো। আমি বললাম না করবো না।

মরজিনা আর বাকি টাকা ফেরত দিলো না। আর আমিও গাব্বুর রাউন্ড টু এর জন্য অপেক্ষা করতে রাজি নই। তাই গাব্বু কে বেড়িয়ে আসতে হলো। পুরো রাস্তা আমি গাব্বুর গালি শুনতে শুনতে এসেছি। কিন্তু সেসব আমার কানে ঢোকেনি। আমার মাথায় সুধু একটা চিন্তা ছিল, আমি কত অভাগা, এই মহিলা নিজের শরীর বিক্রি করেও নিজের সন্তান কে কাছে রাখে। আর আমার আম্মু আমাকে দূরে ঠেলে দিয়েছে। নয়তো এতদিনে সে অবশ্যই আমাকে একবার দেখার জন্য হলেও আসতো। ওই সুরুজ এর চেয়েও অভাগা আমি, এর এই পরিস্থিতির জন্য আমি ও দায়ী। কি সুন্দর সংসার ছিলো আমাদের। আর কোনদিন সেই সংসার ফিরে আসবে না, কারন এই সংসারে আমার আম্মুর কোন স্থান নেই সেখানে স্থান পেয়েছে নীলা নামের একজন। আর আমার আম্মুর জীবনেও হয়ত আমার কোন স্থান নেই, সেখানে জায়গা করে নিয়েছে নাগ মনি দত্ত, অথবা অন্য কেউ।

একটি প্রস্নই সুধু ঘুরে ফিরে আমার মাথায় আসতে লাগলো তাহলে আমার স্থান কোথায়।
 
সেদিন এর পর থেকে গাব্বুর সাথে আমার আর তেমন সম্পর্ক নেই। আমি নিজেই সম্পর্ক ছিন্ন করে দিয়েছি, গাব্বু কে দেখলেই আমার মরজিনার কথা মনে পরে। আর নিজেকে ছোট মনে হয় ওই স্রুজ এর সামনে। গাব্বু অনেক চেষ্টা করেছে আমাকে বোঝানোর, অনেক ক্ষমা চেয়েছে, কিন্তু আমি গাব্বু কে আর পাত্তা দেই না। আসলে গাব্বু কে দেখে আমি মনে মনে একটু শান্তি পেতাম আগে, মনে হতো গাব্বু আমার চেয়ে দুর্ভাগা, কিন্তু ওই মরজিনা আমার শান্তি কেড়ে নিয়েছে।

আবার আমি একা হয়ে গেলাম, সাধারন ভাবে আমার দিন জাপন হতে লাগলো। ধিরে ধিরে লেখা পড়ায় ও মন বসতে সুর করলো আমার। এর মাঝে একদিন এক ঘটনা ঘটলো, মনি বুড়ো এসে হাজির হলো আমাদের বাড়ি, সাথে ছোট মামা। আব্বু তখন বাড়ি ছিলো না। আর গরম এর ছুটি চলছিলো বলে আমি বাড়ি ছিলাম।

আমার সৎ মা নীলা দরজা খুলে দুজন অপরিচিত লোক দেখে একটু ঘাবড়ে গেলো। আমি তখন ড্রইং রুমেই বসে ছিলাম। আমি আমার সৎ মা কে বলতে শুনলাম জিজ্ঞাস করছে ওনারা কার কাছে এসেছে, তখনি আমি মনি বুড়োর গম্ভির কণ্ঠ শুনতে পেলাম

-- আমারা অপুর কাছে এসেছি, ওর বাবা জানে আমারা আসব, আমারা অপু কে নিয়ে যেতে এসেছি, ও কি তৈরি আছে?

আমি প্রচণ্ড আবেগ তারিত হয়ে গেলাম, প্রচণ্ড রাগ এসে যেন আমাকে আঁকড়ে ধরলো। দৌরে নিজের ঘরে চলে গেলাম আমি। রাগে আমার পুরো শরীর কাঁপতে লাগলো। মনে মনে ঠিক করলাম আমি যাবো না ওদের সাথে আমি এখানেই ভালো আছি, দরকার নেই ওদের এই দয়ার। নিজের ঘর থেকেই আমি আমার সৎ মায়ের কথা শুনতে পেলাম,

-- কিন্তু অপুর বাবা তো এমন কোন কথা আমায় বলেনি,

তখন বুড়ো বলল

-- আপনি ফোন করে জিজ্ঞাস করে নিন?

কিছুক্ষন পর আমার সৎ মা নীলা আমার ঘরে এলো, এসে বলল

-- অপু তোমাকে নিতে তোমার মামা আর একজন নানা এসেছে, তৈরি হয়ে নাও? এটা আমার সৎ মায়ের মোলায়েম স্বর, যখন আব্বু অথবা অন্য কেউ সামনে থাকে তখন উনি এমন স্বরে কথা বলেন।

-- আপনি গিয়ে ওদের বলেন আমি যাবো না ওদের সাথে, আমি সৎ মা নীলা কে উদ্দেশ্য করে বলাম। আমার কথা শুনে আমার সৎ মা একটু অবাক ই হলেন, সেই সাথে মনে হয় একটু রাগ ও। তবে আমি আপনাদের আগেই বলেছি ইনি অনেক চতুর, নিজের ইমসান লুকানোর এক আশ্চর্য ক্ষমতা আছে ইনার। তাই মাত্র কয়েক সেকেন্ড এর জন্য ওনার ভ্রূ জুগল কুঞ্চিত হয়ে উঠলেও দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় চলে এলো। উনি স্মিত হেঁসে আমার কাছে চলে এলেন। আমার মাথায় হাত বুলিয়ে খুব নরম গলায় আদর মাখা কন্ঠে বললেন

-- কেন যাবে না অপু? তোমার মায়ের সাথে দেখা হবে ওখানে গেলে, তুমি কি তোমার মায়ের সাথে দেখা করতে চাও না?

মহিলার কথা গুলো আমার জেদ আরও বাড়িয়ে দিলো, আমি বললাম

-- না চাই না, ওদের বলেন চলে যেতে

-- ছিঃ অপু এমন করে না, তুমি এখন বড় হয়েছো এখন বাচ্চা দের মতো করলে চলে। কতদিন তোমার মায়ের সাথে তোমার দেখা হয় না, এছাড়া এখন তো তোমার স্কুল ও বন্ধ, প্রায় ১১ দিনের ছুটি পাচ্ছ। যাও এই সময়টা মায়ের কাছে থেকে আসো।

আমার সৎ মা আমাকে নানা ভাবে বোঝাতে লাগলেন, আমার ও যে যেতে ইচ্ছা করছে না এমন নয়, কিন্তু একটা জেদ এসে জেঁকে বসেছে আমার ঘাড়ে, সেটা কিছতেই নামতে চাচ্ছে না। বার বার সুধু মনে হচ্ছে এতদিন পর আমার কথা মনে পড়েছে তার। কিন্ত আমার সৎ মা কে ধন্যবাদ দিতেই হবে, এতদিন পর ওনার কাছথেকে এমন মা সুলভ আচরন পেয়ে আমার মনটা আরও ব্যাকুল হয়ে উঠলো, শেষে আমি যেতে রাজি হলাম।

নিজের ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম নিজেই। খব বেশি কিছু নেইনি কটা জামা কাপড় নিয়ে নিলাম সুধু। সাথে কিছু পাঠ্য বই, এতদিনের পড়াশুনার যে ক্ষতি হয়েছে সেটা পুষিয়ে নেয়া যাবে এই ছুটিতে। ছোট মামা আর মনি বুড়ো কে ড্রইং রুমেই বসিয়ে রাখা হয়েছে। আমি যখন আমার ব্যাগ হাতে বেড়িয়ে এলাম, তখন ছোট মামা আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। অনেক কষ্টে নিজের কান্না থামিয়ে রাখলাম আমি, কারন আমি কাউকে আমার মনের ব্যাপারটা দেখাতে চাই না।

বাড়ি থেকে বেরোতেই ছোট মামা বলতে শুরু করলো

-- কি কষ্টটাই হলো অপু তোকে......। কিন্তু ছোট মামার কথা শেষ করতে দিলো না মনি বুড়ো। ছোট মামা কে মাঝ পথে থামিয়ে দিয়ে বলল

-- আহা এখন এসব কথা রাখো তো, চলো কোথাও গিয়ে কিছু খেয়ে নেই।

আমি বুঝলাম এদের এখনো খাওয়া হয়নি। আমার অবশ্য খাওয়া হয়ে গেছে। দ্রুত খাওয়া সারলেন ছোট মামা আর বুড়ো। বুড়ো এমনিতে বাইরের খাওয়া খায় না। তাই দুটো কলা আর ডাবের পানি দিয়ে শেষ করলেন খাওয়া। দুপুর তিনটায় আমরা বাসে উঠলাম। মোট পাঁচ ঘণ্টার বাঁশ জার্নি, রাত আট টায় গিয়ে নামলাম নানা বাড়ি। পথে আমি একা এক সিটে বসেছি, আর ছোট মামা আর বুড়ো দুজনে এক সাথে। আমি ইচ্ছা করেই বসেছি এভাবে। যেন কারো সাথে বেশি কথা বলতে না হয়। পুরোটা রাস্তা জুড়ে আমার মনে রাগ আনন্দ আর ভয় এই টিনের মিশেলে এক অবাস্তব অনভুতি তাড়া করে ফিরেছে।

রাগ এই জন্য যে, আমার আম্মু আমাকে এতদিন পর নিজের কাছে নিয়ে যাচ্ছে। আমি কেমন করে থেকেছি, কি খেয়েছি, আব্বু আমার সাথে কেমন আচরন করেছে সেটার কোন খবর ই রাখেন নি। হয়ত নিজের নতুন জীবন নিয়ে আনন্দে এতটাই আত্মহারা হয়ে ছিলো যে তার যে একটা ছেলে আছে সেটাই ভুলে গেছে। অবশ্য নানা বাড়ি যত কাছা কাছি এসেছি রাগ ততো কমেছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেরেছে ভয় আর আনন্দ।

যদিও আমি মনে মনে ভাবি যে আমার আম্মু নিজের সুখ সান্তির জন্য আমাকে ত্যাগ করেছে। কিন্তু মনের গহিন কোনের একটা ছোট্ট জায়গা সেটা মেনে নেয়ে না। সেখানে একটা দৃঢ় বিশ্বাস বাসা বেধে আছে যে আমার আম্মু নিশ্চয়ই ইচ্ছা করে এমন করেনি। তার নিশ্চয়ই অন বাধা ছিলো। আর সেই জন্য ই ভয় হচ্ছে, যদি আম্মু কে দেখার পর আমার সেই শেষ বিশ্বাস টুকু ভেঙ্গে যায়। যদি গিয়ে দেখি আমি যা ভেবেছি তাই সত্যি। আর যতই রাগ হোক আর ভয় হোক, এতদিন পর নিজের আম্মু কে দেখার আনন্দ তো হবেই।

মনি বুড়ো আর নানা বাড়ি ঢুকল না, সরাসরি নিজের বাড়ি চলে গেলো। আমি আর ছোট মামা এসে ঢুকলাম বাড়ির ভেতর, বাড়িতে ঢুকেই হাঁক দিলো ছোট মামা। অমনি দৌরে এলো নানিজান আর আমার দুই মামি। নানিজান এসেই আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলেন। বার বার আমার গালে কপালে চুমু খেতে লাগলেন। যদিও আমি পানের গন্ধ সহ্য করতে পারনি না, তবুও আজ নানিজান এর চুমু গুলি আমাকে প্রবল ভাবে আবেগ আপ্লত করে ফেলল। কয়েক ফোটা চোখের পানি আমার গালের উপর ও অনুভব করলাম। সবাই মিলে আমাকে বাড়ির ভেতর নিয়ে গেলো। এমন কি আমার দুই মামির চোখেও জল দেখলাম আমি। কিন্তু যাকে খুজছি তাকে কোথাও দেখলাম না। বার বার এদিক ওদিক তাকাচ্ছি কোথাও দেখতে পাচ্ছি না আম্মু কে। বেশ অবাক লাগলো আমার এমন উল্টো দৃশ্য দেখে। ভেবেছিলাম আম্মু কেই সবার আগে দেখতে পাবো, আমার জন্য ব্যাকুল হয়ে বারান্দায় দাড়িয়ে থাকবে। অথচ এখানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টো, আমাকে দেখে নানিজান খুশিতে আত্মহারা, মামীরা চোখের জল ফেলছে, আর যার সবচেয়ে বেশি খুসি হওয়ার কথা তাকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না।

ইচ্ছা হলো একবার জিজ্ঞাস করি নানিজান কে, কিন্ত পরক্ষনেই সেই চিন্তা বাদ দিলাম। মনে মনে ভাবলাম আমার যে ভয় ছিলো সেটাই সত্যি হয়েছে। ইচ্ছা হলো এক্ষনি বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যাই, কিন্তু সেটা পারলাম না। এতদুর এসে ওই মুখটা একবার না দেখে চলে যেতে মন শ্বায় দিলো না। একবার দেখে কাল সকালেই চলে যাবো বলে সিধান্ত নিলাম। আর সাথে এও সিধান্ত নিলাম যে আমাকে পৌঁছে দেয়ার জন্য কারো যাওয়া লাগবে না আমার সাথে। আমি একাই চলে যাবো, এখন আমাকে আর ছোট হয়ে থাকলে চলবে না, যার বাবা মা থেকেও নেই তাকে ছোট হয়ে থাকা মানায় না।

বাথরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে এসে দেখি আমার জন্য খাবার বেড়ে রাখা আছে। নানান পদের খাবার সাজিয়ে রাখা আছে, নানিজান সেই খাবার এর সামনে বসে আছে। আমাকে দেখেই হাঁসি মুখে ডেকে পাশে বসালো। কিন্তু আমার খাবার রুচি একদম নেই, এটা সেটা আমার পাতে তুলে দেয়া হচ্ছে,আর এতদিন আমি কি খেয়েছি না খেয়েছি তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে, হাহুতাশ করা হচ্ছে। কিন্তু যার এসব সবচেয়ে বেশি করার কথা তাকে কোথাও দেখতে পাচ্ছি না। এছাড়া এতক্ষণে আমার খেয়াল হলো রাজু আর মতিন কেও দেখেতে পাইনি আমি। আমার মনের ভেতর একটা সম্ভাবনা উঁকি দিলো। খাবার এম্নিতেও আমার গলা দিয়ে নামছিলো না, আর সেই সম্ভাবনার কথা মনে হএতেই আমার গলা যেন শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো। আমি দ্রুত উঠে পড়লাম, নানিজান অবশ্য অনেক চেষ্টা করলো আমাকে আরও খাওয়ানোর জন্য কিন্তু সেটা বৃথাই গেলো।

হাত ধুয়ে আমি বারান্দায় এসে বসলাম, বেশ গরম পড়েছে আজ, এখানে হালকা বাতাস আছে। হালকা বাতাসে বসে চিন্তা ভাবনা করতে লাগলাম। আজ মনি বুড়ো কে দেখে খুব রোগা আর মন মড়া মনে হয়েছে। আমি প্রথমে নিয়ে তেমন ভাবিনি, কারন আমার রাগ ওর উপর ও ছিলো। কিন্তু এখন ব্যাপারটা আমাকে ভাবিয়ে তুলছে। মনি বুড়োর এমন মন মড়া হয়ে থাকার কারন কি? বুড়ো কি দ্বিতীয়বার ছেঁকা খেয়েছে আমার আম্মুর কাছে। আম্মু কি বুড়ো কে আঙুল চুষিয়ে রাজু মতিন এর মতো জোয়ান ছেলেদের পাল্লায় পড়েছে?

আমি বলছি না যে রাজুর মন কামনা পূর্ণ হয়ে গেছে, কিন্তু যদি আম্মু সত্যি ওদের সাথে বেশি মেলামেশা করে থাকে তবে রাজুর ইচ্ছা পুরন হতে বেশি সময় লাগবে না। নাকি ইতিমধ্যে হয়ে গেছে?

এক দিকে মনি বুড়ো ছেঁকা খাওয়ায় আমার আনন্দ হচ্ছে অন্যদিকে রেনু খালার কথা চিন্তা করে আমার আম্মুর ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা হতে লাগলো আমার। আমি বারান্দায় পায়চারি করতে লাগলো। বার বার ঘড়ি দেখছি আমি, প্রায় সারে নটা বেজে গেছে কিন্তু আম্মুর বাড়ি ফেরার লক্ষন নেই। আম্মু রাজু মতিন এর সাথে কি কি করতে পারে সেরকম নানা বীভৎস দৃশ্য আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছে আর আমি এই গরমে শিউড়ে শিউড়ে উঠছি। এর মাঝে নানাজান বাড়ি এলো। আমার সাথে কিছুক্ষন কথা বলে নিজের ঘরে চলে গেলেন উনি। আমি সুধু হু হাঁ করে উত্তর দিয়ে গেছি ওনার কথার।

নানিজান ও একবার আমার খোঁজ নিলেন, আমাকে চিন্তিত দেখে বললেন

-- মা এখনো এলো না বলে রাগ করেছিস? তোর মা রাজু মতিন এর সাথে শহরে গেছে।

আমি আর এ বিষয়ে কথা বলতে আগ্রহি হলাম না বলে নানিজান চুপ করে রইল তবে আমাকে ছেড়ে চলে গেলো না। বারান্দায় বসে রইলো একটা চেয়ারে। নানিজান এর এমন আচরণে আমার রাগ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছিলো। নানিজান এর তো এতো উতলা ওয়্যার কথা নয় আমার জন্য। যার এমন করার কথা সে তো আমি আসবো জেনেও রাজু মতিন এর সাথে শহরে চলে গেছে।

একটু পর বড় মামা মেঝ মামা এলো, ওনাদের সাথেও হু হাঁ করে কথা শেষ করলাম আমি। নানিজানবার বার আমাকে রুমের ভেতরে আসতে বলছেন, কিন্তু আমি কিছুতেই রুমের ভেতরে যেতে চাই না। আমি চাই ওই মহিলার সাথে চোখে চোখ রেখে তাকাতে যখন সে ফুর্তি করে ফিরে আসবে। আমি দেখতে চাই সে কতটা ফুর্তিবাজ হয়ে উঠছে। আমাকে যেন দেখা না যায় সে জন্য আমি বারান্দার লাইট অফ করে দিয়েছি। কিন্তু উঠানের লাইট জ্বালানো আছে বলে আমি বারান্দা থেকে সব দেখতে পাচ্ছি।

অবশেষে সেই সময় চলে এলো, অনেক দূর থেকেই হাসির শব্দ ভেসে আসছে, হ্যাঁ এই হাঁসি আমার খুব পরিচিত, রিনিঝিনি চুরি বাজার মতো হাসির শব্দ, যে শব্দ শুনলে আমার মনটা আনন্দে ভরে উঠত। যে হাসির কাছা কাছি থাকলে আমার মনে হতো আমি নিরাপদ আছি। আজ সে হাসির শব্দ শুনে শরীরে জ্বালাপোড়া উঠে যাচ্ছে। সাথে রাজু মতিন এর গলার শব্দ ও শুনতে পেলাম। তার একটু পর ই দেখতে পেলাম তাকে, যাকে দেখার জন্য এই কয়মাস আমার মনটা সারাক্ষন উতলা হয়ে থেকেছে। শত অভিমান ভুলে আমি চলে এসেছি এতো দূর। সেই মহিলা হেঁসে হেঁসে কি যেন বলছে আর রাজুর পিঠে দুষ্টুমি করে চড় মারছে।

একটু যেন রোগা হয়েছে বলে মনে হলো, হ্যাঁ তা তো হবেই, জোয়ান ছেলেদের মন রাঙ্গাতে হবে না।
 
-- সত্যি বলতেসি ফুপি, ওই নায়িকার চেয়ে তুমি কোন অংশে কম না।

-- একটা কষে থাপ্পর লাগাবো তোকে, ফাজিল হয়েছিস খুব না? ফুপির সাথে এমন কথা বলে কেউ

-- তোমাকে কে আমার ফুপি বলে মনেই হয় না, তোমাকে আমাদের সাথে আগামী বছর কলেজে ভর্তি করিয়ে দেয়া যাবে। সত্যি বলছি

হি হি হি, সে কি হাঁসি, থামবে বলে মনেই হচ্ছে না। একটা নিজের অর্ধেক বয়সি ছেলে বলছে তাকে দেখতে ১৬-১৭ এর খুকি বলে মনে হয় আর সে সেই অবিশ্বাস্য কমপ্লিমেন্ট শুনে হাসির ফোয়াড়া ছোটাচ্ছে!!!!! অথচ এটা ভাবছে না যে কি আকাশ কুসুম কথাটাই না বলেছে রাজু।আর পুরুষ মানুষ তখনি কোন মিথ্যা প্রশংসা করে যখন সে সেই নারী কে ভজিয়ে ভাজিয়ে কিছু আদায় করে নিতে চায়। এতো বয়স হয়েছে অথচ এই ব্যাপারটা সে বুঝতে পারছে না দেখা বেশ অবাক হলাম আমি। আর কোন এঙ্গেলে তাকে ১৬-১৭ বছরের মনে হয়? উনার কি এখন উচিৎ ছিলো না রাজু কে কড়া করে একটা ধমক দেয়া। রাজুকে নিজের স্থান বুঝিয়ে দেয়া। না সে সেটা করছে না, বরং হেঁসে লুটোপুটি খাচ্ছে।

হায়রে নারী জাত, নিজের প্রশংসা শুনলে হুস থাকে না, এবার সেই প্রশংসা যতই অমুলক আর অবাস্তব হোক। প্রায় পাঁচ মাস পর নিজের পেটের ছেলে আসবে কই তার জন্য অপেক্ষা করবে, নানা সুস্বাদু খাবার তৈরি করবে, তা না সে গিয়েছিলো দুই লম্পট এর সাথে সিনেমা দেখতে। এসব ভাবতে ভাবতে আপনাতেই আমার দুই হাত মুঠো হয়ে এলো। আর তখনি আমার উপর নজর পরলো আমার “মমতাময়ী” মায়ের। একটু থমকে গেলো, মনে হচ্ছে ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না, অথাবা আমাকে চিনতে পারছে না অন্ধকারে।

আপন মনেই আমার ঠোট একটু বেঁকে গিয়ে তিক্ত একটা হাঁসি ফুটে উঠলো। কারন আমি শুনেছি মায়েরা নাকি সন্তানের গন্ধ শুঁকেই চিনে ফেলতে পারে। আর এদিকে আমার জননী, সিনেমা হলে ফুর্তি করে এসে অন্ধকারে আমাকে চিনতে পারছে না। আমি কি এই পাঁচ মাসে এতই পরিবর্তিত হয়ে গেছি। কতটা লম্বা হয়েছি আমি?

আসলে পরিবর্তন আমার মাঝে হয়নি, হয়েছে আমার জননীর মাঝে। উনি এতক্ষণ সিনামা হলে থাকার কারনে উনার চোখ ঝলসে আছে। তাই অন্ধকারে চোখ সইয়ে নিতে সময় লাগছে। অইত মনে হয় চিনতে পেরেছে, হ্যাঁ শিওর পেরেছে। এখন কি করবে? খুব সহজ ভাবে জিজ্ঞাস করবে “ওহ অপু তুই এসেছিস, ভালোই হলো, ভাত খেয়েছিস? তাহলে দাড়িয়ে আছিস কেনো? গিয়ে শুয়ে পর, এতো লম্বা জার্নি করে এসেছিস” নাকি অন্য কিছু করবে, অভিনয় করবে? উনি তো আবার সিনামার নায়িকার চেয়ে কম নন।

হ্যাঁ আসলেই উনি সিনামার নায়িকার চেয়ে কম নন, প্রায় দউরেই এলেন আমার কাছে, এসেই জড়িয়ে ধরলেন। গালে কপালে, থুতনিতে, আর গলায় ঘাড়ে চুমুর বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন। একদম পারফেক্ট, এর চেয়ে ভালো আর কেউ করতে পারবে না। কাভি খুসি কাভি গাম ছবির জয়া আর সাহ্রুক ও পারেনি।

বুকে চেপে ধরে রাখলেন আমাকে, আগে কতবার ধরেছেন এমন করে হিসেব নেই, তবে এই বুকের সাথে চিপকে থাকার তৃষ্ণা আমার কোনদিন মেটেনি। তবে আজ বড় সুগন্ধির গন্ধ পাচ্ছি যে, তাই গত পাঁচ মাসের জমিয়ে রাখা আবেগ আমার কাছে ভিরতে পারছে না। প্রয়াধন আর সুগন্ধির গন্ধ যে তাদের কে আমার কাছে আসতে দিচ্ছে না। আমার হাত দুটো আমার শরীর এর দু পাশেই অলস পড়ে রইলো।

তবে চোখ দুটো বাধা মানছে না, এরা আপন মনের রাজার মতো নিজেদের কলসি উল্টো করে দিয়েছে। আম্মুর কণ্ঠ নালির ওঠা নামা আর বুকের শ্বাস প্রশ্বাস নেয়ার অনিয়ম আমাকে বলে দিচ্ছে উনিও কাঁদছে। আর এই কান্নাটা আমাকে একটু দ্বিধায় ফেলে দিচ্ছে, এতো ভালো অভিনয় করা কি সত্যি সম্ভব? আর এই ক্ষণিক এর দুর্বলতা প্রচণ্ড ভাবে আমার আবেগ গুলিকে শক্তিশালী করে তুলল। তারা সকল প্রসাধনী সাঁজ সজ্জার বাধা ডিঙ্গিয়ে এসে আমার চারপাশ ঘিরে ধরলো। আমার হাত দুটি ও আর অলস পড়ে রইলো না। জড়িয়ে ধরলো আম্মুকে, সত্যি এর চেয়ে শান্তি দুনিয়ার আর কোথাও নেই। এখন আমি আর সুঘন্ধির সু ঘ্রান পাচ্ছি না, চিরাচরিত মায়ের বুকের গন্ধ এসে ধাক্কা দিচ্ছে আমার নাকে। বুক ভরে শ্বাস নিয়ে নিতে লাগলাম আমি, যতক্ষণ সম্ভব হয়। হয়ত এই সুযোগ আর সামনে বেশি আসবে না।

রাত ভর ঘুম হলো না আমার, এর একটা কারন প্রচণ্ড উত্তেজনা, আর সারাদিনের জার্নি। আম্মু এখন পাশ ফিরে ঘুমিয়ে আছে, অনেকটা রাত পর্যন্ত জেগে ছিলো। অনেক কথা বলেছে আমার সাথে, খুঁটি নাটি অনেক প্রস্ন করেছে। আমিও যত টুকু বলা যায় বলেছি। কথা বলার সময় আম্মু বেশ হাঁসি খুসি ই ছিলো। প্রথম দেখা হওয়ার পড়ে আর কাদা কাটি করেনি। আমার জন্য ব্যাপারটা বেশ সস্তিকর ছিলো। কারন আমার চারপাশে আবার সেই বাস্তবতার অদৃশ্য দেয়াল উঠে এসেছে। তাই নিছক আবেগে অন্ধ হওয়ার চান্স নেই। কারন আমার কাছে মনে হচ্চলি আরও কিছুক্ষন সেই আবেগে ডুবে থাকেল আমি এমন কিছু বলে বসতাম যা পরে আমার জন্য লজ্জাজনক হতো। হয়তবা আমি আম্মুর কাছে বলেই বসতাম, আমি আর ফিরে যেতে চাই না, আম্মু আমার সামনেই রাজু মতিন এর সাথে যা খুসি করুক, আমি সুধু তার কাছে থাকতে চাই, তার কোন কাজের বাধা আমি হবো না।

ওই কথা গুলো বলতে বলতে আম্মুর সামনে হাত জোড় করে থাকা অবস্থায় নিজেকে কল্পনা করতেই বেশ লজ্জা হচ্ছে আমার। আর যদি বাস্তবে বলে দিতাম তাহলে কি হতো?

সকালে ঘুম থেকে উঠতে যথারীতি দেরি হয়ে গেলো আমার। এখানে কেউ ডাক দেয়ার নেই, তার উপর স্কুল ও নেই। তাই ভোর বেলায় ঘুমালেও ঘুমটা বেশ ভালোই হলো। আম্মু নেই বিছানয়, যে দিকটা আম্মু ঘুমিয়ে ছিলো সেখানটায় এখনো বিছানার চাদর একটু অগোছালো হয়ে আছে। আমি উঠে বাথরুমে গেলাম, এক টা নতুন ব্রাস রাখাই ছিলো সেখানে। সেটা যে আমার জন্য তাতে সন্দেহ নেই। তাই বিনা দ্বিধায় ব্যাবহার করলাম।

প্রাত কাজ সম্পন্ন করে বেরোতেই মেঝ মামির সাথে দেখা। আমাকে নাস্তা করার জন্য আসতে বলল মামি। এখন যদিও নাস্তা করার সময় না প্রায় এগারোটা বাজে। তবুও আমি গেলাম তার সাথে, হালকা পাতলা খেলাম। আম্মুর কথা জিজ্ঞাস করতেই বলল সে রান্না ঘরে আমার জন্য রান্না করছে। তাই নাকি? মনে মনে বলাম, কেন জানি মনে হলো একবার দেখেই আসি। তাই রান্না ঘরের দিকে গেলাম, দেখলাম সত্যি ই বলেছে নানি বড় মামি আর আম্মু রান্না ঘরে। আম্মু কে দেখলাম, ঘেমে নেয়ে একাকার, মনে হয় রান্নার অভ্যাস চলে গেছে এতদিনে। বাবার বাড়িতে আর নিশ্চয়ই কাজ করতে হয় না তাকে।

প্রথমে বড় মামি দেখলো আমাকে, উবু হয়ে বসে, তরকারি কাটছে, উনি বেশ মোটাসোটা তাই বুকের অনেকটা উথলে বেড়িয়ে আছে, আমার দৃষ্টি সেদিকে এক পলকের জন্য গেলেও সাথে সাথে ফিরিয়ে নিলাম। হঠাত করে রাজুর কথা মনে হয়ে গিয়েছিলো বড় মামির বুকের দিকে তাকিয়ে। তাই সাথে সাথে চোখ সরিয়ে নিয়েছি।

-- অপু নাস্তা খেয়েছো? বড় মামির কথা শুনে আম্মু আর নানি ও ফিরে তাকিয়েছে। দুজনেই হেঁসে দিলো আমাকে দেখে। আম্মু আমাকে দেখে ডাক দিলো

-- অপু ভেতরে আয় দেখ ইলিশ মাছের ডিম ভেজেছি, আয় খা

হ্যাঁ ইলিশ মাছের ডিম আমার প্রিয়, আমাকে একটা পিরি দেয়া হলো আমি সেটায় বসতেই একটা সসার এ করে আমাকে ইলিস মাছের ডিম ভাজা দেয়া হলো। আমি ডিম খাচ্ছি আর আম্মুর দিকে তাকাচ্ছি। আসলেই আম্মু বেশ চিকন হয়েছে। চোখের নিচে কালি ও আছে, দেখে মনে হচ্ছে বেশ ক্লান্ত তবে সেই ক্লান্তি চাপা পরে আছে। সাড়া মুখে ঝলমলে একটা হাসির আভা, সবচেয়ে বেশি হাঁসি খেলা করছে আম্মুর দুটো চোখে।

সেখানে একটা তৃপ্ত ভাব ফুটে উঠেছে, চোখের কোটর বসে যাওয়া বা চোখের নিচের কালি দুটোর একটাও সেই তৃপ্তি দাবিয়ে রাখতে পারেনি। আসলে এই তৃপ্তি কিসের? এই চিন্তাটা আমার মাথায় ঘুরপাক খেতে লাগলো। আর তিনজন এর মাঝে বসে চিন্তা করা সম্ভব নয় তাই আমি উঠে এলাম। বারান্দায় এসে বসলাম, রাজু মতিন এর দেখা নেই, এটা আমার জন্য একটা ভালো খবর। আমার মনে হয় এই মুহূর্তে আমি ওদের ঠিক সহ্য করতে পারবো না। এখন আমার নিরিবিলি সময় দরকার, আমাকে ভেবে বার করতে হবে আম্মুর এই পরিতৃপ্তি এলো কোথা হতে।

এটা কি নির্ঝঞ্ঝাট জীবনের তৃপ্তি, স্বামী সন্তান এর ঝামেলা থেকে মুক্ত হয়ে সামনের যে বেড়ীহীন জীবন অপেক্ষা করছে সেই আলোর ঝলকানি তার চোখে খেলা করছে। না না এমন হলে চোখের নিচে কালি পড়বে কেনো? আমি মনে মনে প্রস্ন করলাম। হয়ত আজকাল রাত জাগা হয়, কিন্তু কেন? আমার জন্য চিন্তায়? না না আমার জন্য চিন্তা থাকলে এতদিনে নিশ্চয়ই যোগাযোগ হতো। কোন না কোন একটা উপায় বের করেই ফেলত। আমার জন্য চিন্তায় নিশ্চয়ই তার রাতের ঘুম হারাম হয়নি।

তাহলে তার চোখের নিচে কালি পড়ার কারন কি? আর কি কারনেই বা স্লিম হওয়ার চেষ্টা করছে। সে কি আমাকে আব্বুর কাঁধে ঝুলিয়ে দিয়ে নিজের জন্য নতুন জীবন সাথি খোজার জন্য নিজেকে সানিয়ে নিচ্ছে? নাকি মনি বুড়োর কাছে রাতবিরাতে যায়? নাকি এর চেয়েও বাজে কিছু করছে? মনি বুড়োর মন মজাতে তো আর নিজেকে শান দেয়ার কিছু নেই। তাহলে কি রাজু?

হ্যাঁ রাজুই হবে? গতকাল রাজু যেভাবে কথা বলছিলো সেটা কোন ফুপি ভাই ছেলের কথা নয়। চূড়ান্ত কিছু না হলেও বেশ অনেকটা এগিয়ে গেছে রাজু তাহলে। হয়ত আম্মুও রাজুর মতো ইয়ং এবং “ফানি” কারো প্রতি ধিরে ধিরে আসক্ত হয়ে গেছে। হ্যাঁ তাই হবে, আমি শিওর হলাম। সাথে সাথে একটা পাপ বোধ এসে জড় হলো আমার মনে। একটা প্রস্ন এসে আমার কানে বাজতে লাগলো, আমি কি এমটাই চেয়েছিলাম না?

নিজ হাতে নষ্ট করিনি আমাদের পরিবার? হ্যাঁ করেছি।

কিন্তু আমি তো এমন জীবন চাইনি, আমি যে জীবন চেয়েছিলাম সেখানে আমার আর আম্মু দুজনের ই ঠাই ছিলো। কিন্তু এখন আমি আমার কোন জায়গা দেখতে পাচ্ছি না। আব্বু দ্বিতীয় বিয়ে করেছে, সে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে সুখে আছে। এদিকে আম্মু নিজের ভবিষ্যৎ ভেবে আনন্দিত। কিন্তু আমি কি করবো, আমার কি হবে? চাইলে আব্বুর সাথে থাকতে পারি, তবে আমি সেখানে থাকবো না। আমার দ্বারা হবে না। আমি আম্মুর সাথে থাকতে চাই।

আমি একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিলাম, যদি আম্মুর জীবনে আমার স্থান না হয় তাহলে আমি তার নিজের জন্য আলাদা জীবন গড়তে দেবো না, পদে পদে বাধা দেবো। অবশ্যই দেবো। তাকে যদি নতুন কিছু চিন্তা করতেই হয় আমাকে নিয়েই করতে হবে। আমি ছাড়া তার জীবনে অন্য কেউ গুরুত্বপূর্ণ থাকবে না। আমি থাকতে দেবো না। তার জীবনের এক মাত্র উদ্দেশ্য হতে হবে আমাকে নিয়ে ভাবা। এমনটাই হওয়া উচিৎ। আব্বু মনে হয় ঠিক ই করতো, কড়া শাসনে রাখতো আম্মুকে, আম্মুর আসল চরিত্র সম্পর্কে আব্বুর সঠিক ধারনা ছিলো।

এইসব ভাবতে ভাবতে আমি মনি বুড়োর বাড়ির দিকে গেলাম। আমার উদ্দেশ্য মনি বুড়োর কাছ থেকে কিছু তথ্য নেয়া। কারন শেষ বার যখন বুড়োর সাথে আমার দেখা হয়েছিলো তখন আমার মনের অবস্থা অন্য রকম ছিলো, বুড়োর নিশ্চয়ই ধারনা এখনো এমন আছে। তাই বুড়ো মুখ ফস্কে দু একটি কথা বলে ফেলতে পারে।

কিন্তু বুড়ো কে পেলাম না, ঘর বন্ধ। নিশ্চয়ই কোথাও গিয়েছে, তাই আর দেরি করলাম না। হেঁটে হেঁটে নানা বাড়ি চলে এলাম, এসেই দেখা রাজু মতিন এর সাথে। দুটোই খালি গাঁয়ে আর কাঁধে একটি করে গামছা। দুই ফাজিল এর মুখেই আকর্ণ বিস্তৃত হাঁসি। আমাকে দেখিএ মতিন বলল

-- কি রে অপু এমন পেচার মতো মুখ করে কই গিয়েছিলি?

যদিও মেজাজ খারাপ হলো তবুও বুঝতে দিলাম না ওদের। বললাম

-- এই ঘুরতে গিয়েছিলাম, তোরা কোথায় জাচ্ছিস?

-- পুকুরে গোসল করতে? তুই যাবি এখন তো শীত নেই, তোর তেল ও লাগাতে হবে না।

চিন্তা করলাম, দেখি এদের হাব ভাবে কিছু বোঝা যায় কিনা? তাই রাজি হয়ে গেলাম। বললাম তোরা যা আমি গামছা নিয়ে আসি।

পুকুর ঘাটে গিয়ে দেখি রাজু মতিন একা নয় ওদের আরও চারজন বন্ধু আছে। বেশ হাঁসা হাঁসি করতে কতে ওরা একটা বল দিয়ে পানিতে খেলছে। কি কি যেন বলাবলি করছিল ওরা আমাকে দেখে চুপ হয়ে গেলো।

-- কিরে আমাকে দেখে কথা থামিয়ে দিলি যে, ভয় পেলি নাকি? কি নিয়ে কথা হচ্ছিলো? আমি পুকুর ঘাটের সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে বললাম

-- তোকে দেখে তেলাপোকা ও ভয় পাবে না হা হা হা, আর আমরা কলেজে ভর্তি হওয়া আর কলজ এর মেয়েদের নিয়ে আলোচনা করছিলাম এসব জেনে তোর লাভ কি? তোর তো দেরি আছে। রাজু হাসতে হসাতে বলল

-- তুই আগে পাশ কর, তারপর কথা বলিস, দেখ আমার সাথে আবার পরিক্ষা দিতে হয় কিনা।

-- নাহ এবার ফুপি ছিলো, আমি শিওর পাশ রাজু বিটকিলে একটা হাঁসি দিয়ে বলল।

কথাটা খারাপ কিছু না তবে আমার মেজাজ বিগড়ে গেলো, আমি বললাম

-- তোর ফুপিও তোর মতো, আন্ডার মেট্রিক

কথাটা বলার সাথে সাথে রাজুর মুখ কালো হয়ে গেলো। এমন একটা ভাব করছে যেন আম্মু এস এস সি পাশ করেনি বলে আমার চেয়ে ওর লজ্জা বেশি। তবে ওর মুখের অবস্থা আমার মনে একটু হলেও শান্তি দিলো। আমি গুন গুন করে গান গাইতে গাইতে পানিতে নামলাম।
 
প্ল্যান হলো কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়ার, প্রথমে আমার যেতে ইচ্ছা করছিলো না, তবে রাজু আর মতিন আমাকে খুব করে ধরলো। ওদের তো এখন ফ্রি সময়, ওরা এতদিন আমার জন্য ওয়েট করেছে তাই এখন যেতেই হবে আমাকে। আমি বুঝলাম আমি যদি এখন না যাই তাহলে ওরা আমি চলে গেলে যাবে। হয়ত আম্মুকে নিয়েই যাবে, কিন্তু সেটা হতে দিতে মন চাইলো না। তাই রাজি হয়ে গেলাম, কিন্তু দেখলাম আম্মু নিজেই যেতে চাচ্ছে না। বলছে

--এমন গরমে কেউ যায়, সমুদ্রে যেতে হয় শীতের সময়, এখন গেলে সবাই পুড়ে কয়লা হয়ে আসবো।

-- আরে ফুপি, তোমার কিছুই হবে না, বিদেশি মেয়েরা তো ইচ্ছে করে রোদে পোড়ে,

-- এই রোদে জ্বর এসে যাবে, এই রোদ সেই রোদ না

কিন্তু এসব কথা চালাচালির এক পর্যায়ে আম্মু রাজি হলো, আম্মু অন্য মামা মামিদের ও নিয়ে যাওয়ার কথা বলল। কিন্তু তারা কেউ রাজি হলো না। মামীরা যাবে না শুনে আম্মুও বেঁকে বসলো, শেষে আমিই আম্মুকে অনুরধ করলাম, তাতেই আম্মু রাজি হয়ে গেলো। আমার এই অনুরধ করার পেছনে অবশ্য বিশেষ কারন ছিলো। সেই কারণটা হচ্ছে, ঘুরতে গেলে মানুষ একটু বেশি রোমান্টিক হয়ে ওঠে, আর সেই রোমান্টিক মুডে আম্মুর আর রাজুর কিছু যদি আমি হাতে নাতে ধরতে পারি, এই কারনেই আমি আম্মু কে যেতে রাজি করালাম। শেষে ঠিক হলো, আমি আম্মু রাজু মতিন আর ছোট মামা যাবে।

পরের দিন ই আমরা যাত্রা করলাম, একটা গাড়ি ভারা করে, ছোট মামা সামনে আমি আর আম্মু মাঝের সিটে আর রাজু মতিন একদম শেষের সিটে। নানা বাড়ি থেকে কক্সবাজার যেতে ৪ ঘণ্টার মতো সময় লাগে। সত্যি বলতে কি গাড়িতে উঠে কিছুদুর যাওয়ার পর আমি নিজেও বেশ উপভোগ করতে লাগলাম। পেছনের সিটে রাজু আর মতিন প্রচণ্ড দুষ্টুমি করছে, মাঝে মাঝে আমার কাছে মনে হচ্ছে আমি যাওয়াতে ওরা সত্যি সত্যি খুসি হয়ছে। এর মাঝে আরও একটা ব্যাপার ঘটছে আম্মু মাঝে মাঝেই অহেতুক আমাকে পাশ থেকে জড়িয়ে ধরছে। সত্যি বলতে আমার এটা ভালোই লাগছে।

আমরা যে গাড়ি করে যাচ্ছি তাতে এসি নেই, তাড়াহুড়ো করে ভারা করা তাই। এর জন্য গাড়ির সব গুলি জানালা খোলা, বাতাস আছে কিন্তু সেটা গরম। আমারা সবাই ঘেমে গেছি। ঘণ্টা দুই যাওয়ার পর একটা রেস্তোরায় গাড়ি থামালো, আসলে এই ব্রেক গরম থেকে বাচার জন্য। রেস্তোরায় ওয়াস রুমে মুখ ধোয়ার সময় দেখাল্ম সরা মুখ ধুলায় ভরে গেছে। একটা টেবিলে বসলাম আমরা, বাড়ি থেকে নাস্তা করেই বেরিয়েছি তাই বেশি ভারি কিছু খেলাম না, সবাই কফি নিলাম। কফি খাওয়া শেষেই দেখলাম রাজু আর মতিন হাওয়া, সাথে ছোট মামাও। ছোট মামা যে বিড়ি ফুঁকতে গিয়েছেন সেটা বোঝাই যাচ্ছে, উনি প্রচুর সিগারেট খায়। নিশ্চয়ই এই দুই ঘণ্টার ব্যাপারটা পুষিয়ে নেবেন। কিন্তু রাজু আর মতিন গেলো কোথায়।

-- কিরে অপু তোর ভালো লাগছে তো?

অন্য মনস্ক ছিলাম তাই আম্মুর কথাটা শুনে একটু চমকে উথেছিলাম, সেটা দেখে আম্মু জিজ্ঞাস করলো

-- কি ভাবিস এতো সব সময়, যখনি তোকে দেখি আনমনা দেখি।

-- না না তেমন কিছু তো না আম্মু, ভাবছিলাম রাজু আর মতিন কোথায় গেলো?

-- হা তাই তো আমি খেয়াল ই করিনি ওই দুই দুষ্ট গেলো কই? দুটোয় ভীষণ ফাজিল, যেদিন তুই এলি এসদিন কি বলল জানিস, তুই নাকি পরদিন আসবি, আমার যেন মন খারাপ না হয় তাই আমাকে সিনেমা দেখাতে নিয়ে গেলো। পড়ে জানতে পারলাম ওরা আমাকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য এটা করেছে ...... হি হি হি

আম্মু খুব হাসতে লাগলো, একদম মন খোলা হাঁসি যাকে বলে। আসে পাশের লোকজন তাকাচ্ছে, কেউ বিরক্ত, কেউ অবাক আবার কারো চোখে লালসা ও দেখলাম। আগে এই লালসার দৃষ্টি গুলি আমাকে কেমন জানি খুব উত্তেজিত করতো, এখন অবশ্য করছে না। বরং একটু রাগ হচ্ছে। তাই আমি আসে পাশের লোকজন এর উপর থেকে দৃষ্টি সরিয়ে আম্মুর দিকে তাকালাম। এখনো হাসির একটা আমেজ রয়ে গেছে চোখে মুখে তবে হাঁসি থেমেছে। মনের ভেতর একটা প্রস্ন উঁকি দিলো, আম্মু কি এই দুই দিনে এসব বানিয়েছে আমাকে বলার জন্য। না হলে হঠাত আজকে আমাকে কেন কৈফিয়ত দিচ্ছে। গত দুই ঘণ্টা গাড়ির ভেতরে বসে যে চিন্তা গুলি মিইয়ে এসেছিলো, সেগুলি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাইলো।

-- আম্মু তুমি অনেক শুকিয়ে গেছো।

আম্মুর সাথে দেখা হওয়ার পর এই প্রথম মনে হয় আমি আম্মুকে কিছু জিজ্ঞাস করলাম। বাকি সময় সুধু হু হা করে উত্তর দিয়ে গেছি আম্মুর সহস্র প্রশ্নের। তবে প্রশ্নটা যে সুধু আম্মুর ভঙ্গুর সাস্থের জন্য আমার দুশ্চিন্তা থেকে এসেছে তাও একশো ভাগ সত্যি নয়।

-- তাই নাকি!!! ভালোই হয়েছে কি বলিস, মজার ছলে বলল আম্মু।

-- চোখের নিচে কালি ও পড়েছে দেখচি? খুব কি রাত জাগো আজকাল ... আমি আম্মুর মতো মজা করে জিজ্ঞাস করলাম না। বেশ গম্ভির ভাবেই জিজ্ঞাস করলাম। কিন্তু আম্মু এবার ও মজার ছলে উত্তর দিলো।

-- তুই দেখি আমার আব্বার মতো কথা বলছিস রে অপু হি হি হি ... শোন আমার বাপ এখনো বেঁচে আছে দুই বাপের দরকার নাই আমার, এক বাপ এর শাসন ই যথেষ্ট হি হি হি

এমন সময় রাজু আর মতিন এর আগমন ঘটলো, এবং ওদের গায়েব হওয়ার কারন ও জানা গেলো। ওরা গিয়েছিলো রেস্তোরার পাশের মার্কেটে। এই রেস্তোরার পাশেই একটা মার্কেট আছে। বেশ কয়েকটা দোকান ও আছে। একটা ব্যাগ দেখতে পেলাম রাজুর হাতে সেটা রাজু আম্মুর দিকে বাড়িয়ে দিলো।

-- এর ভেতর কি রে? আম্মু বেশ অবাক হয়েই প্রস্ন করলো

-- খুলেই দেখো ...... রাজুর মুখে একটা রহস্যময় হাঁসি। ভাবটা এমন যে ভেতরে না জানি কি রসগোল্লা আছে

আম্মু প্যাকেট খুলতেই একটা রোদ চশমা বেড়িয়ে এলো, দেখতে খুব বিচ্ছিরি,আর বেশ নিম্ন মানের। মনে হয় ৫০ টাকা দিয়ে কিনেছে। অথচ আম্মু সেটা দেখে বেজায় খুসি। এমন ভাব করছে যেন রাজু একটা হীরার গয়না এনে দিয়েছে।

-- এটা আবার কিনতে গেলি কনো? টাকা পেলি কোথায়? আমি কি এসব পড়ি কখনো ...... আম্মু সেই কমদামি উদ্ভট দেখতে রোদ চশমাটি উল্টে পাল্টে দেখতে দেখতে বলতে লাগলো। মুখে যাই বলুক তার চোখে যে খুসি উপচে পড়ছে সেটা বোঝার জন্য বিশেষজ্ঞ হতে হবে না। আমার মুখের ভেতরটা তেত হয়ে গেলো।

-- আমি তো সানগ্লাস পরিনা রে ... এটা দিয়ে কি করবো? আম্মু আবার জিজ্ঞাস করলো, ন্যাকামো করছে দেখে খুব বিরক্ত লাগলো আমার।

-- লাগবে ফুপি, বিচ এর রোদ খুব কড়া হয়, তখন এটা হলে তাকাতে পারবে না

ঈশ আর একজন এসেছে, ৫০ টাকার রোদ চশমা এনে সে বিচের রোদ তারাচ্ছে। এই চশমায় কিছুই হবে না। বরং সূর্যের তাপ বহুগুন বৃদ্ধি পেয়ে চোখের উপর পড়বে। চোখের আশেপাশের ত্বক পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে এতে।

-- কেমন লাগছে রে অপু?

দেখলাম আম্মু চশমাটা চোখে দিয়েছে। অসম্ভব সুন্দর লাগছে আম্মুকে। নাহ ভুল বললাম এতক্ষণ যে চশমাটাকে সাধারন চেয়েও নিম্নমানের মনে হচ্ছিলো সেটার রুপ মুহূর্তে অন্য রকম হয়ে গেছে। আম্মু একটা কালো রং এর সালোয়ার কামিজ পরনে ছিলো, সাথে কালো রং এর ওড়না, ওড়নাটা দিয়ে মাথায় ঘোমটা দেয়া ছিলো। এখন সাথে চশমাটা যোগ হওয়ায় আম্মুকে সম্পূর্ণ অন্য রকম লাগছে। মেগাজিনে দেখা কোন মডেল এর চেয়ে কম মনে হচ্ছে না, আম্মুর ফোলা গাল আর ওভাল সেপ এর চেহারায় দারুন মানিয়েছে চশমাটি (একদম বাড়িয়ে বলছি না, কারন আম্মুকে ভালো না দেখা গেলেই আমি খুসি হতাম)

-- তেমন ভালো না চশমাটা, আমি মৃদু ভাবে বললাম, আসলে ভালো না বলার তেমন জোর পাচ্ছিলাম না।

-- ধুর ফুপি তুমি ওর কথা একদম শুনবে না, দারুন লাগছে একদম ফাটাফাটি, দাড়াও কয়েকটা ছবি তুলি ... এই বলে মতিন নিজের ডিজিটাল ক্যামেরা বের করলো।

প্রথম দুই একটা ছবিতে আম্মু একটু আড়ষ্ট থাকলেও, প্রতিটা ফ্লাস এর সাথে সাথে আম্মুর জড়তা কাটতে লাগলো। থুতনির নিচে হাত রেখে, পাশে তাকিয়ে আরও নানা ভঙ্গিমায় ছবি তুলতে লাগলো। একপর্যায়ে আমি আর থাকতে না পেরে একটু বিরক্তি নিয়েই বললাম এবার আমাদের যাওয়া উচিৎ, নাহলে পৌছুতে পৌছুতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে।

-- হ্যাঁ হ্যাঁ চল চল, দেখত রাজু তোর ছোট চাচ্চু কই গেলো? আম্মু দ্রুত চশমাটা খুলে ফেলল। একটা জড়তা আবার তাকে ঘিরে ধরেছে। ঠিক যেমনটা আব্বুর কোন বকুনি খাওয়ার পর হতো।

গাড়িতে ওঠার আগে আমাকে একটা রোদ চশমা কিনে দেয়ার জন্য অনেক জোরাজুরি করলো আম্মু, কিন্তু আমি কিছুতেই রাজি হলাম না। শেষে বলাম কক্সবাজার গিয়ে কিনে নেবো। তার পর ক্ষান্ত হলো আম্মু।

ছোট মামা কে পাওয়া গেলো মোবাইল ফোনে কথারত অবস্থায়। নতুন মোবাইল ফোন কিনেছে ছোট মামা। নানা বাড়িতে সুধু বড় মামা আর ছোট মামার ই আছে এই যিনিস। আমারা গাড়িতে উঠে আবার যাত্রা শুরু করলাম।

আম্মু রোদ চশমাটা হাতে নিয়ে রেখছে, কিন্তু পড়ছে না। সেদিকে লক্ষ করে আমার একটু মন খারাপ হলো, যে আচরন আমি করেছি সেটা কড়া আমার উচিৎ হয়নি। আসলে তখন অনেক রাগ হয়েছিলো, মনে হচ্ছিলো আমি কেন কিনে দিলাম না। যদিও আমার কাছে টাকা তেমন নেই তাই আমার পক্ষে কিনে দেয়া সম্ভব ও নয়। কিন্তু সেটা কোন এস্কিউজ নয়, আমার মনে এমন ভাবনা আসেনি যে আম্মুকে একটা কিনে দেয়া উচিৎ।

এসব ভাবতে ভাবতে আমার মনে একটা খেয়াল এলো, আমার বয়সি কোন ছেলের মনে এমন খেয়াল আসা স্বাভাবিক কিনা আমি জানি না, তবে এসেছে। ঠিক খেয়াল বলা যাবে না অনেকটা থিওরির মতো। আমার রাগের উৎস আসলে আমার ইগো। রাজু কিনে দিয়েছে, আমি দিতে পারিনি, বা আমার মাথায় আসেনি এটা আমি মেনে নিতে পারিনি। এই ইগো আমি আমার বাবার কাছ থেকে পেয়েছি। খুব খারাপ জিনিস এটা। যেটা আমার চিন্তায় ও আসেনি, সেটা আর একজন করেছে সেটা আমি সহ্য করতে পারছি না।বেশিরভাগ পুরুষ মানুষ এমনি হয়, এরা নিজেদের কাছের নারীদের নিজেদের সম্পদ মনে করে। মনে করে আমি যা দেবো তাতেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। মনে মনে আমি লজ্জিত হলাম।

তাই যখন রাজু আম্মুকে সানগ্লাস টি পড়ে থাকতে বলল, তখন আমিও আম্মুকে বললাম। কারন বেশ ধুলো আসছিলো আর বাতাস ও প্রচুর। পুর গাড়িতে আমি আর ড্রাইভার বাদে সবার চোখেই রোদ চশমা। এর জন্য অবশ্য আমি ই দায়ী, একবার অবশ্য আম্মু আমাকে বলল ওনার টা পড়তে কিন্তু লেডিস চশমা পড়ার চেয়ে ধুলোবালি আমার কাছে শ্রেয় মনে হলো।

আমারা আগে থেকে হোটেল বুক করে আসিনি। কিন্তু তাতে কোন সমস্যা হলো না। এই গরমে পুরো এলাকা সুনসান, তাই হোটেল পেতে তো সমস্যা হলেই না উল্টো আমারা আমাদের মন মতো হোটেল পেলাম অনেক কম ভারায়। রুম নেয়া হলো দুটো। একটাতে আমি আর আম্মু অন্যটাতে ছোট মামা রাজু আর মতিন। ওদের রুমে একটা এক্সট্রা বিছানা দেয়ার জন্য বাড়তি কিছু চার্জ করলো। দুটো রুম একটা অন্যটার পাশাপাশি। দুটোই শী ভিউ, মানে বারান্দায় দারালে সমুদ্র দেখা যায়। সুধু মাত্র অফ সিজনে এলেই এসব সুবিধা এতো সহজে পাওয়া যায়।

আমরা যখন রুমে ঢুকলাম তখন বাঝে দুপুর বারোটা। তাই প্রথম যে চিন্তা মাথায় এলো সেটা হচ্ছে গোসল করা। প্রথমে গেলো আম্মু, আম্মু গোসল করে বের হতেই আমি গেলাম। আমি যখন বের হলাম তখন আমাদের ঘরে রাজু কে দেখতে পেলাম। গোসল করতে এসেছে, আমি বের হতেই দ্রুত ঢুকে গেলো। আর তখনি আমার একটা কথা মনে হলো, বাথরুমে আমি আম্মুর পরিতেক্ত জামা কাপড় দেখে এসেছি। কালো সালোয়ার এর নীচ থেকে অফ হোয়াইট ব্রা স্ট্রাপ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিলো।

অনেকদিনের পুরনো অনুভুতির সামনে আবার মুখো মুখি দাঁড়ালাম আমি। তবে আজকের টা আরও ভয়ানক আরও তীব্র। কারন আজকের অনুভুতির সাথে প্রচণ্ড রাগ মিশে যাচ্ছে। এই অনুভুতির কথা প্রকাশ করা আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না, আমি বিছানায় বসে পড়লাম। বাথ্রুমের ভেতরে রাজু আমার আম্মুর ব্রা কে ভায়োলেট করছে সেই কথা কল্পনা করে রাগে আর উত্তেজনায় আমার শরীর কাঁপছে।
 
দুপুরের খাওয়া শেষে আর কারো বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিলো না। এতো রোদ বাইরে যে মনে হয় শরীর এর চামড়া যেন ঝলসে যাবে। তাই সবাই রুমে ফিরে এলাম। খুব দ্রুত ঘুমিয়ে পরেছিলাম, হয়ত চাপে থাকলে ঘুম পায় দ্রুত। বিকেলে ঘুম থেকে ডেকে তুলল আম্মু। সবাই মিলে বিচে যাওয়ার প্ল্যান হলো।

দল বেধে বেড়িয়ে এলাম সবাই, বাকি রইলো সুধু ছোট মামা। উনার নাকি মাথা ব্যাথা করছে তাই এলো না। আমারা যে হোটেলে উঠছে তার সামনে বিশাল একটি আঙ্গিনা, আঙ্গিনা পেড়িয়ে মুল ফটক দিয়ে বের হলেই দুপাশে ঝাউ গাছের সাড়ি ঝুক্ত চিকন একটি পিচ ধালাই রাস্তা। আর রাস্তার পর থেকেই বিচ শুরু। হোটেলের নিজস্ব বিচ আছে, এই বিচে যাওয়ার জন্য কাঠের একটি পুল বানানো। সেই পুলের উপর আমি আর আম্মু পাশাপাশি হাঁটছি আমাদের সামনে রাজু আর মতিন। আমি রাজু আর মতিন এর দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে হাঁটছিলাম, ওরা দুজন কানে কানে কি যেন বলাবলি করছে আর হাসছে একটু পর পর।

নতুন কোন প্ল্যান কি? প্রশ্নটা এলো আমার মনে, তাই একটু দ্রুত হেঁটে ওদের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করতেই আম্মু পেছন থেকে ডাক দিলো?

“ এই আমাকে একলা ফেলে তোরা আগে আগে জাচ্ছিস কেনো?”

থমকে দাঁড়ালাম আমারা তিনজন, আম্মুকে সুযোগ দিলাম আমাদের কাছে আসার। আম্মুর পরনে একটি গোলাপি সাদা ডোরাকাটা সালোয়ার কামিজ, পাজামা টা বেশ ঢিলে ঢালা তাই বাতাসে পত পত করে উড়ছে, সাথে গোলাপি জর্জেট ওড়না। মাথায় একটি গোল হ্যাট আর চোখে রাজুর কিনে দেয়া রোদ চশমা। দারুন দেখাচ্ছে আম্মুকে।

তবে আম্মু আমাদের কাছে আসার আগেই রাজু দ্রুত হেঁটে আম্মুর কাছে চলে গেলো। বাকিটা পথ রাজু আর আম্মু এক সাথে হেঁটে এলো আর আমি মতিন এর সাথে। কাঠের পুল শেষ হতেই তপ্ত বালু, বিকেলের ঝাঁজ হীন রোদে অনেকটাই ঠাণ্ডা হয়ে এসেছে, কিন্তু তারপর ও বেশ লাগে। আমি দ্রুত তপ্ত বালুর অংশটুকু পার হয়ে গেলাম।

হোটেলের সিকিউরিটি দুজন এসে আমাদের রুম নাম্বার জিজ্ঞাস করে, দুটো রুমের জন্য আমাদের ছাতা সহ দুটো বিচ চেয়ার দেখিয়ে দেয়া হলো। আর বলে গেলো আমারা চাইলে আরও চেয়ার ব্যাবহার করতে পারি, কারন হোটেলে গেস্ট নাই বললেই চলে। মোট ২০ টি চেয়ারের মাঝে আমাদের দুটো বাদে আর একটি চেয়ারে সুধু মানুষ আছে, এক দম্পতি, একজন আর একজনের সাথে চিপকে শুয়ে আছে।

আমি একটা চেয়ারে বসে পড়লাম হেলান দিয়ে, অন্যটায় মতিন। তখনো রাজু আর আম্মু এসে পৌছুতে পারেনি। দেখলাম রাজ আম্মুর জুতা জোড়া নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছে, আর আম্মু গরম বালুতে হালকা লাফিয়ে লাফিয়ে হাঁটছে। আম্মুর মনোযোগ গরম বালুতে থাকায় ওড়না সামলাতে ভুলে গেছে, তাই বাতসে পাতলা ওড়না উড়ে বুকের অনেকটা অনাবৃত। টাইট কামিজ এর উপর দিয়ে চোখা হয়ে বড় বড় দুটো স্তন সগৌরবে নিজেদের মহিমা প্রকাশ করছে।

“ এই অপু, বসে না থেকে চল সাগরে নামি”

হঠাত মতিন এর কথায় আমি আম্মু আর রাজুর দিক থেকে চোখ সরালাম, বললাম নারে “রোদ আর একটু কমুক, তুই গেলে যা”। কিন্তু মতিন আমার কোন কথা শুনল না, হাত ধরে টেনে আমাকে পানিতে নিয়ে গেলো। আমার কাছে মনে হলো রাজু আর আম্মুকে আমার কাছ থেকে দূরে রাখার জন্যই এটা করছে মতিন।

আমাদের দুজন কে পানিতে নামতে দেখে আম্মু দূর থেকে হাত নেড়ে নেড়ে কি যেন বলার চেষ্টা করছে, কিন্তু আমাদের কানে সেই শব্দ আসছে না। কারন বাসাত বইসে উল্টো দিক থেকে আর এছাড়া সাগর বেশ উত্তাল, শীতের চেয়ে গরম কালে সাগর উত্তাল থাকে বেশি। বুঝতে পারলাম আম্মু আমাদের বেশি দূরে যেতে নিষেধ করছে। আমরা বেশি দূরে গেলাম ও না, আমার কোমর সমান পানি পর্যন্ত নামলাম।

অবশেষে আম্মু আর রাজু আমাদের জন্য নির্ধারিত বিচ চেয়ার পর্যন্ত পৌছুতে সক্ষম হলো, এসেই আম্মু একটা চেয়ারে হেলান দিয়ে বসলো। আর রাজু নিজের ক্যামেরা আম্মুর কাছে জমা দিয়ে এক প্রকার লাফাতে লাফাতে এসে পানিতে নামলো। রাজুর আচরণে আমি বেশ অবাক হচ্ছি। সত্যি বলতে আমি অন্য রকম ভেবেছিলাম। আমি ভেবেছিলাম রাজু সুধু আম্মুর পেছন পেছন ঘুরবে। কিন্তু তেমন কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। এই যে আম্মু কে একা রেখে রাজু চলে এলো আমাদের সাথে। এটা আমি আশা করিনি। এছাড়া হোটেলে পৌঁছুনর পর সেই গোসল কান্ডের পর আমি গিয়েছিলাম বাথরুমে। দেখতে গিয়েছিলাম রাজু কি সত্যি সত্যি আম্মুর ব্রা নিয়ে কিছু করেছে কিনা। কিন্তু অবাক বিষয় তেমন কোন লক্ষন আমি দেখতে পাইনি।

রাজুর এমন আচরন আমাকে বেশ ভাবিয়ে তুলছে। এর মানে দুটো ব্যাপার হতে পারে, এক এটা রাজু আর আম্মু দুজনে মিলে ঠিক করেছে যে আমার সামনে একটু দূরে দূরে থাকবে ওরা। অথবা রাজু নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে, তাই এখন আর ওর আম্মুর প্রতি কোন লালশা নেই। তবে ছোট বেলায় রাজু যেমন আম্মুর নেওটা ছিলো এখনো তাই আছে।

এসব ভাবতে ভাবতে আমি একটু অন্যমনস্ক হয়ে গিয়েছিলাম। হঠাত নিজের মুখের উপর নোনা পানির ঝটকা লাগতেই মি চকিতে ফিরে তাকালাম। দেখলাম রাজু দাঁত বের করে হাসছে। “ কিরে পিচ্চি, তুই তো এবার ঢাকা গিয়ে ভাবুক হয়ে গেছিস, কবিতা তবিতা লিখছিস নাকি”

রাজুর দাঁত বের করা মুখের দিকে আমি ভালো করে তাকালাম, হ্যাঁ এই সেই ছেলে যে আমার আম্মুকে চায়, আমাদের সংসার ভাঙার জন্য এর বড় একটা হাত আছে,হয়তবা এই ছেলের জন্যই আমার আম্মু আমাকে একা একা ঢাকা ফেলে রেখেছে। এছাড়া ছোট বেলা থেকেই আমার এর প্রতি হালকা হিংসে ছিলো,কারন তখন আম্মু নানা বাড়ি এলে এই ছেলেটি আমার প্রতি আম্মুর মমতায় ভাগ বসাতো। অথচ কি সহজ ভাবেই না এই ছেলেটি আমার সাথে দুষ্টুমি করছে, দেখে মনে হচ্ছে গত ছয় মাস আমি যে যন্ত্রণা পেয়েছি তাতে ওর কোন হাত ই নেই। আবার এক পশলা নোনা জল এসে আমার মুখের উপর পড়লো, এবার ও রাজুই মেড়েছে।

হঠাত আমার মনে হলো, আমি চাইলেও ঘটনা বলি আর পরিবর্তন করতে পারবো না। যত বেশি পরিবর্তন এর চেষ্টা করবো তত বেশি খারপ হবে। একবার পরিবর্তন এর চেষ্টা করে আমি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। তাই যা হওয়ার হবে, এই ভেবে আমি ধিরে ধিরে দুই হাত পানিতে ডুবালাম, তারপর সবেগে হাতের তালু দিয়ে পানি ছুড়ে মারলাম রাজুর মুখের দিকে।

“ কবি হলেও তোর মতো, গরু কে শায়েস্তা করার ক্ষমতা আমার আছে “

শুরু হলো আমাদের তিনজনের পানি র মাঝে দাপাদাপি।
 
দুপুরের খাওয়া শেষে আর কারো বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিলো না। এতো রোদ বাইরে যে মনে হয় শরীর এর চামড়া যেন ঝলসে যাবে। তাই সবাই রুমে ফিরে এলাম। খুব দ্রুত ঘুমিয়ে পরেছিলাম, হয়ত চাপে থাকলে ঘুম পায় দ্রুত। বিকেলে ঘুম থেকে ডেকে তুলল আম্মু। সবাই মিলে বিচে যাওয়ার প্ল্যান হলো।

দল বেধে বেড়িয়ে এলাম সবাই, বাকি রইলো সুধু ছোট মামা। উনার নাকি মাথা ব্যাথা করছে তাই এলো না। আমারা যে হোটেলে উঠছে তার সামনে বিশাল একটি আঙ্গিনা, আঙ্গিনা পেড়িয়ে মুল ফটক দিয়ে বের হলেই দুপাশে ঝাউ গাছের সাড়ি ঝুক্ত চিকন একটি পিচ ধালাই রাস্তা। আর রাস্তার পর থেকেই বিচ শুরু। হোটেলের নিজস্ব বিচ আছে, এই বিচে যাওয়ার জন্য কাঠের একটি পুল বানানো। সেই পুলের উপর আমি আর আম্মু পাশাপাশি হাঁটছি আমাদের সামনে রাজু আর মতিন। আমি রাজু আর মতিন এর দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে হাঁটছিলাম, ওরা দুজন কানে কানে কি যেন বলাবলি করছে আর হাসছে একটু পর পর।

নতুন কোন প্ল্যান কি? প্রশ্নটা এলো আমার মনে, তাই একটু দ্রুত হেঁটে ওদের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করতেই আম্মু পেছন থেকে ডাক দিলো?

“ এই আমাকে একলা ফেলে তোরা আগে আগে জাচ্ছিস কেনো?”

থমকে দাঁড়ালাম আমারা তিনজন, আম্মুকে সুযোগ দিলাম আমাদের কাছে আসার। আম্মুর পরনে একটি গোলাপি সাদা ডোরাকাটা সালোয়ার কামিজ, পাজামা টা বেশ ঢিলে ঢালা তাই বাতাসে পত পত করে উড়ছে, সাথে গোলাপি জর্জেট ওড়না। মাথায় একটি গোল হ্যাট আর চোখে রাজুর কিনে দেয়া রোদ চশমা। দারুন দেখাচ্ছে আম্মুকে।

তবে আম্মু আমাদের কাছে আসার আগেই রাজু দ্রুত হেঁটে আম্মুর কাছে চলে গেলো। বাকিটা পথ রাজু আর আম্মু এক সাথে হেঁটে এলো আর আমি মতিন এর সাথে। কাঠের পুল শেষ হতেই তপ্ত বালু, বিকেলের ঝাঁজ হীন রোদে অনেকটাই ঠাণ্ডা হয়ে এসেছে, কিন্তু তারপর ও বেশ লাগে। আমি দ্রুত তপ্ত বালুর অংশটুকু পার হয়ে গেলাম।

হোটেলের সিকিউরিটি দুজন এসে আমাদের রুম নাম্বার জিজ্ঞাস করে, দুটো রুমের জন্য আমাদের ছাতা সহ দুটো বিচ চেয়ার দেখিয়ে দেয়া হলো। আর বলে গেলো আমারা চাইলে আরও চেয়ার ব্যাবহার করতে পারি, কারন হোটেলে গেস্ট নাই বললেই চলে। মোট ২০ টি চেয়ারের মাঝে আমাদের দুটো বাদে আর একটি চেয়ারে সুধু মানুষ আছে, এক দম্পতি, একজন আর একজনের সাথে চিপকে শুয়ে আছে।

আমি একটা চেয়ারে বসে পড়লাম হেলান দিয়ে, অন্যটায় মতিন। তখনো রাজু আর আম্মু এসে পৌছুতে পারেনি। দেখলাম রাজ আম্মুর জুতা জোড়া নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছে, আর আম্মু গরম বালুতে হালকা লাফিয়ে লাফিয়ে হাঁটছে। আম্মুর মনোযোগ গরম বালুতে থাকায় ওড়না সামলাতে ভুলে গেছে, তাই বাতসে পাতলা ওড়না উড়ে বুকের অনেকটা অনাবৃত। টাইট কামিজ এর উপর দিয়ে চোখা হয়ে বড় বড় দুটো স্তন সগৌরবে নিজেদের মহিমা প্রকাশ করছে।

“ এই অপু, বসে না থেকে চল সাগরে নামি”

হঠাত মতিন এর কথায় আমি আম্মু আর রাজুর দিক থেকে চোখ সরালাম, বললাম নারে “রোদ আর একটু কমুক, তুই গেলে যা”। কিন্তু মতিন আমার কোন কথা শুনল না, হাত ধরে টেনে আমাকে পানিতে নিয়ে গেলো। আমার কাছে মনে হলো রাজু আর আম্মুকে আমার কাছ থেকে দূরে রাখার জন্যই এটা করছে মতিন।

আমাদের দুজন কে পানিতে নামতে দেখে আম্মু দূর থেকে হাত নেড়ে নেড়ে কি যেন বলার চেষ্টা করছে, কিন্তু আমাদের কানে সেই শব্দ আসছে না। কারন বাসাত বইসে উল্টো দিক থেকে আর এছাড়া সাগর বেশ উত্তাল, শীতের চেয়ে গরম কালে সাগর উত্তাল থাকে বেশি। বুঝতে পারলাম আম্মু আমাদের বেশি দূরে যেতে নিষেধ করছে। আমরা বেশি দূরে গেলাম ও না, আমার কোমর সমান পানি পর্যন্ত নামলাম।

অবশেষে আম্মু আর রাজু আমাদের জন্য নির্ধারিত বিচ চেয়ার পর্যন্ত পৌছুতে সক্ষম হলো, এসেই আম্মু একটা চেয়ারে হেলান দিয়ে বসলো। আর রাজু নিজের ক্যামেরা আম্মুর কাছে জমা দিয়ে এক প্রকার লাফাতে লাফাতে এসে পানিতে নামলো। রাজুর আচরণে আমি বেশ অবাক হচ্ছি। সত্যি বলতে আমি অন্য রকম ভেবেছিলাম। আমি ভেবেছিলাম রাজু সুধু আম্মুর পেছন পেছন ঘুরবে। কিন্তু তেমন কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। এই যে আম্মু কে একা রেখে রাজু চলে এলো আমাদের সাথে। এটা আমি আশা করিনি। এছাড়া হোটেলে পৌঁছুনর পর সেই গোসল কান্ডের পর আমি গিয়েছিলাম বাথরুমে। দেখতে গিয়েছিলাম রাজু কি সত্যি সত্যি আম্মুর ব্রা নিয়ে কিছু করেছে কিনা। কিন্তু অবাক বিষয় তেমন কোন লক্ষন আমি দেখতে পাইনি।

রাজুর এমন আচরন আমাকে বেশ ভাবিয়ে তুলছে। এর মানে দুটো ব্যাপার হতে পারে, এক এটা রাজু আর আম্মু দুজনে মিলে ঠিক করেছে যে আমার সামনে একটু দূরে দূরে থাকবে ওরা। অথবা রাজু নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে, তাই এখন আর ওর আম্মুর প্রতি কোন লালশা নেই। তবে ছোট বেলায় রাজু যেমন আম্মুর নেওটা ছিলো এখনো তাই আছে।

এসব ভাবতে ভাবতে আমি একটু অন্যমনস্ক হয়ে গিয়েছিলাম। হঠাত নিজের মুখের উপর নোনা পানির ঝটকা লাগতেই মি চকিতে ফিরে তাকালাম। দেখলাম রাজু দাঁত বের করে হাসছে। “ কিরে পিচ্চি, তুই তো এবার ঢাকা গিয়ে ভাবুক হয়ে গেছিস, কবিতা তবিতা লিখছিস নাকি”

রাজুর দাঁত বের করা মুখের দিকে আমি ভালো করে তাকালাম, হ্যাঁ এই সেই ছেলে যে আমার আম্মুকে চায়, আমাদের সংসার ভাঙার জন্য এর বড় একটা হাত আছে,হয়তবা এই ছেলের জন্যই আমার আম্মু আমাকে একা একা ঢাকা ফেলে রেখেছে। এছাড়া ছোট বেলা থেকেই আমার এর প্রতি হালকা হিংসে ছিলো,কারন তখন আম্মু নানা বাড়ি এলে এই ছেলেটি আমার প্রতি আম্মুর মমতায় ভাগ বসাতো। অথচ কি সহজ ভাবেই না এই ছেলেটি আমার সাথে দুষ্টুমি করছে, দেখে মনে হচ্ছে গত ছয় মাস আমি যে যন্ত্রণা পেয়েছি তাতে ওর কোন হাত ই নেই। আবার এক পশলা নোনা জল এসে আমার মুখের উপর পড়লো, এবার ও রাজুই মেড়েছে।

হঠাত আমার মনে হলো, আমি চাইলেও ঘটনা বলি আর পরিবর্তন করতে পারবো না। যত বেশি পরিবর্তন এর চেষ্টা করবো তত বেশি খারপ হবে। একবার পরিবর্তন এর চেষ্টা করে আমি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। তাই যা হওয়ার হবে, এই ভেবে আমি ধিরে ধিরে দুই হাত পানিতে ডুবালাম, তারপর সবেগে হাতের তালু দিয়ে পানি ছুড়ে মারলাম রাজুর মুখের দিকে।

“ কবি হলেও তোর মতো, গরু কে শায়েস্তা করার ক্ষমতা আমার আছে “

শুরু হলো আমাদের তিনজনের পানি র মাঝে দাপাদাপি।
Next কখন আসবে?
 
দুপুরের খাওয়া শেষে আর কারো বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিলো না। এতো রোদ বাইরে যে মনে হয় শরীর এর চামড়া যেন ঝলসে যাবে। তাই সবাই রুমে ফিরে এলাম। খুব দ্রুত ঘুমিয়ে পরেছিলাম, হয়ত চাপে থাকলে ঘুম পায় দ্রুত। বিকেলে ঘুম থেকে ডেকে তুলল আম্মু। সবাই মিলে বিচে যাওয়ার প্ল্যান হলো।

দল বেধে বেড়িয়ে এলাম সবাই, বাকি রইলো সুধু ছোট মামা। উনার নাকি মাথা ব্যাথা করছে তাই এলো না। আমারা যে হোটেলে উঠছে তার সামনে বিশাল একটি আঙ্গিনা, আঙ্গিনা পেড়িয়ে মুল ফটক দিয়ে বের হলেই দুপাশে ঝাউ গাছের সাড়ি ঝুক্ত চিকন একটি পিচ ধালাই রাস্তা। আর রাস্তার পর থেকেই বিচ শুরু। হোটেলের নিজস্ব বিচ আছে, এই বিচে যাওয়ার জন্য কাঠের একটি পুল বানানো। সেই পুলের উপর আমি আর আম্মু পাশাপাশি হাঁটছি আমাদের সামনে রাজু আর মতিন। আমি রাজু আর মতিন এর দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে হাঁটছিলাম, ওরা দুজন কানে কানে কি যেন বলাবলি করছে আর হাসছে একটু পর পর।

নতুন কোন প্ল্যান কি? প্রশ্নটা এলো আমার মনে, তাই একটু দ্রুত হেঁটে ওদের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করতেই আম্মু পেছন থেকে ডাক দিলো?

“ এই আমাকে একলা ফেলে তোরা আগে আগে জাচ্ছিস কেনো?”

থমকে দাঁড়ালাম আমারা তিনজন, আম্মুকে সুযোগ দিলাম আমাদের কাছে আসার। আম্মুর পরনে একটি গোলাপি সাদা ডোরাকাটা সালোয়ার কামিজ, পাজামা টা বেশ ঢিলে ঢালা তাই বাতাসে পত পত করে উড়ছে, সাথে গোলাপি জর্জেট ওড়না। মাথায় একটি গোল হ্যাট আর চোখে রাজুর কিনে দেয়া রোদ চশমা। দারুন দেখাচ্ছে আম্মুকে।

তবে আম্মু আমাদের কাছে আসার আগেই রাজু দ্রুত হেঁটে আম্মুর কাছে চলে গেলো। বাকিটা পথ রাজু আর আম্মু এক সাথে হেঁটে এলো আর আমি মতিন এর সাথে। কাঠের পুল শেষ হতেই তপ্ত বালু, বিকেলের ঝাঁজ হীন রোদে অনেকটাই ঠাণ্ডা হয়ে এসেছে, কিন্তু তারপর ও বেশ লাগে। আমি দ্রুত তপ্ত বালুর অংশটুকু পার হয়ে গেলাম।

হোটেলের সিকিউরিটি দুজন এসে আমাদের রুম নাম্বার জিজ্ঞাস করে, দুটো রুমের জন্য আমাদের ছাতা সহ দুটো বিচ চেয়ার দেখিয়ে দেয়া হলো। আর বলে গেলো আমারা চাইলে আরও চেয়ার ব্যাবহার করতে পারি, কারন হোটেলে গেস্ট নাই বললেই চলে। মোট ২০ টি চেয়ারের মাঝে আমাদের দুটো বাদে আর একটি চেয়ারে সুধু মানুষ আছে, এক দম্পতি, একজন আর একজনের সাথে চিপকে শুয়ে আছে।

আমি একটা চেয়ারে বসে পড়লাম হেলান দিয়ে, অন্যটায় মতিন। তখনো রাজু আর আম্মু এসে পৌছুতে পারেনি। দেখলাম রাজ আম্মুর জুতা জোড়া নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছে, আর আম্মু গরম বালুতে হালকা লাফিয়ে লাফিয়ে হাঁটছে। আম্মুর মনোযোগ গরম বালুতে থাকায় ওড়না সামলাতে ভুলে গেছে, তাই বাতসে পাতলা ওড়না উড়ে বুকের অনেকটা অনাবৃত। টাইট কামিজ এর উপর দিয়ে চোখা হয়ে বড় বড় দুটো স্তন সগৌরবে নিজেদের মহিমা প্রকাশ করছে।

“ এই অপু, বসে না থেকে চল সাগরে নামি”

হঠাত মতিন এর কথায় আমি আম্মু আর রাজুর দিক থেকে চোখ সরালাম, বললাম নারে “রোদ আর একটু কমুক, তুই গেলে যা”। কিন্তু মতিন আমার কোন কথা শুনল না, হাত ধরে টেনে আমাকে পানিতে নিয়ে গেলো। আমার কাছে মনে হলো রাজু আর আম্মুকে আমার কাছ থেকে দূরে রাখার জন্যই এটা করছে মতিন।

আমাদের দুজন কে পানিতে নামতে দেখে আম্মু দূর থেকে হাত নেড়ে নেড়ে কি যেন বলার চেষ্টা করছে, কিন্তু আমাদের কানে সেই শব্দ আসছে না। কারন বাসাত বইসে উল্টো দিক থেকে আর এছাড়া সাগর বেশ উত্তাল, শীতের চেয়ে গরম কালে সাগর উত্তাল থাকে বেশি। বুঝতে পারলাম আম্মু আমাদের বেশি দূরে যেতে নিষেধ করছে। আমরা বেশি দূরে গেলাম ও না, আমার কোমর সমান পানি পর্যন্ত নামলাম।

অবশেষে আম্মু আর রাজু আমাদের জন্য নির্ধারিত বিচ চেয়ার পর্যন্ত পৌছুতে সক্ষম হলো, এসেই আম্মু একটা চেয়ারে হেলান দিয়ে বসলো। আর রাজু নিজের ক্যামেরা আম্মুর কাছে জমা দিয়ে এক প্রকার লাফাতে লাফাতে এসে পানিতে নামলো। রাজুর আচরণে আমি বেশ অবাক হচ্ছি। সত্যি বলতে আমি অন্য রকম ভেবেছিলাম। আমি ভেবেছিলাম রাজু সুধু আম্মুর পেছন পেছন ঘুরবে। কিন্তু তেমন কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। এই যে আম্মু কে একা রেখে রাজু চলে এলো আমাদের সাথে। এটা আমি আশা করিনি। এছাড়া হোটেলে পৌঁছুনর পর সেই গোসল কান্ডের পর আমি গিয়েছিলাম বাথরুমে। দেখতে গিয়েছিলাম রাজু কি সত্যি সত্যি আম্মুর ব্রা নিয়ে কিছু করেছে কিনা। কিন্তু অবাক বিষয় তেমন কোন লক্ষন আমি দেখতে পাইনি।

রাজুর এমন আচরন আমাকে বেশ ভাবিয়ে তুলছে। এর মানে দুটো ব্যাপার হতে পারে, এক এটা রাজু আর আম্মু দুজনে মিলে ঠিক করেছে যে আমার সামনে একটু দূরে দূরে থাকবে ওরা। অথবা রাজু নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে, তাই এখন আর ওর আম্মুর প্রতি কোন লালশা নেই। তবে ছোট বেলায় রাজু যেমন আম্মুর নেওটা ছিলো এখনো তাই আছে।

এসব ভাবতে ভাবতে আমি একটু অন্যমনস্ক হয়ে গিয়েছিলাম। হঠাত নিজের মুখের উপর নোনা পানির ঝটকা লাগতেই মি চকিতে ফিরে তাকালাম। দেখলাম রাজু দাঁত বের করে হাসছে। “ কিরে পিচ্চি, তুই তো এবার ঢাকা গিয়ে ভাবুক হয়ে গেছিস, কবিতা তবিতা লিখছিস নাকি”

রাজুর দাঁত বের করা মুখের দিকে আমি ভালো করে তাকালাম, হ্যাঁ এই সেই ছেলে যে আমার আম্মুকে চায়, আমাদের সংসার ভাঙার জন্য এর বড় একটা হাত আছে,হয়তবা এই ছেলের জন্যই আমার আম্মু আমাকে একা একা ঢাকা ফেলে রেখেছে। এছাড়া ছোট বেলা থেকেই আমার এর প্রতি হালকা হিংসে ছিলো,কারন তখন আম্মু নানা বাড়ি এলে এই ছেলেটি আমার প্রতি আম্মুর মমতায় ভাগ বসাতো। অথচ কি সহজ ভাবেই না এই ছেলেটি আমার সাথে দুষ্টুমি করছে, দেখে মনে হচ্ছে গত ছয় মাস আমি যে যন্ত্রণা পেয়েছি তাতে ওর কোন হাত ই নেই। আবার এক পশলা নোনা জল এসে আমার মুখের উপর পড়লো, এবার ও রাজুই মেড়েছে।

হঠাত আমার মনে হলো, আমি চাইলেও ঘটনা বলি আর পরিবর্তন করতে পারবো না। যত বেশি পরিবর্তন এর চেষ্টা করবো তত বেশি খারপ হবে। একবার পরিবর্তন এর চেষ্টা করে আমি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। তাই যা হওয়ার হবে, এই ভেবে আমি ধিরে ধিরে দুই হাত পানিতে ডুবালাম, তারপর সবেগে হাতের তালু দিয়ে পানি ছুড়ে মারলাম রাজুর মুখের দিকে।

“ কবি হলেও তোর মতো, গরু কে শায়েস্তা করার ক্ষমতা আমার আছে “

শুরু হলো আমাদের তিনজনের পানি র মাঝে দাপাদাপি।
দাদা নতুন পাঠ দিন
 
ভাই আপডেট দেন।
অনেকদিন যাবৎ অপেক্ষায় আছি।
 
দুপুরের খাওয়া শেষে আর কারো বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিলো না। এতো রোদ বাইরে যে মনে হয় শরীর এর চামড়া যেন ঝলসে যাবে। তাই সবাই রুমে ফিরে এলাম। খুব দ্রুত ঘুমিয়ে পরেছিলাম, হয়ত চাপে থাকলে ঘুম পায় দ্রুত। বিকেলে ঘুম থেকে ডেকে তুলল আম্মু। সবাই মিলে বিচে যাওয়ার প্ল্যান হলো।

দল বেধে বেড়িয়ে এলাম সবাই, বাকি রইলো সুধু ছোট মামা। উনার নাকি মাথা ব্যাথা করছে তাই এলো না। আমারা যে হোটেলে উঠছে তার সামনে বিশাল একটি আঙ্গিনা, আঙ্গিনা পেড়িয়ে মুল ফটক দিয়ে বের হলেই দুপাশে ঝাউ গাছের সাড়ি ঝুক্ত চিকন একটি পিচ ধালাই রাস্তা। আর রাস্তার পর থেকেই বিচ শুরু। হোটেলের নিজস্ব বিচ আছে, এই বিচে যাওয়ার জন্য কাঠের একটি পুল বানানো। সেই পুলের উপর আমি আর আম্মু পাশাপাশি হাঁটছি আমাদের সামনে রাজু আর মতিন। আমি রাজু আর মতিন এর দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে হাঁটছিলাম, ওরা দুজন কানে কানে কি যেন বলাবলি করছে আর হাসছে একটু পর পর।

নতুন কোন প্ল্যান কি? প্রশ্নটা এলো আমার মনে, তাই একটু দ্রুত হেঁটে ওদের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করতেই আম্মু পেছন থেকে ডাক দিলো?

“ এই আমাকে একলা ফেলে তোরা আগে আগে জাচ্ছিস কেনো?”

থমকে দাঁড়ালাম আমারা তিনজন, আম্মুকে সুযোগ দিলাম আমাদের কাছে আসার। আম্মুর পরনে একটি গোলাপি সাদা ডোরাকাটা সালোয়ার কামিজ, পাজামা টা বেশ ঢিলে ঢালা তাই বাতাসে পত পত করে উড়ছে, সাথে গোলাপি জর্জেট ওড়না। মাথায় একটি গোল হ্যাট আর চোখে রাজুর কিনে দেয়া রোদ চশমা। দারুন দেখাচ্ছে আম্মুকে।

তবে আম্মু আমাদের কাছে আসার আগেই রাজু দ্রুত হেঁটে আম্মুর কাছে চলে গেলো। বাকিটা পথ রাজু আর আম্মু এক সাথে হেঁটে এলো আর আমি মতিন এর সাথে। কাঠের পুল শেষ হতেই তপ্ত বালু, বিকেলের ঝাঁজ হীন রোদে অনেকটাই ঠাণ্ডা হয়ে এসেছে, কিন্তু তারপর ও বেশ লাগে। আমি দ্রুত তপ্ত বালুর অংশটুকু পার হয়ে গেলাম।

হোটেলের সিকিউরিটি দুজন এসে আমাদের রুম নাম্বার জিজ্ঞাস করে, দুটো রুমের জন্য আমাদের ছাতা সহ দুটো বিচ চেয়ার দেখিয়ে দেয়া হলো। আর বলে গেলো আমারা চাইলে আরও চেয়ার ব্যাবহার করতে পারি, কারন হোটেলে গেস্ট নাই বললেই চলে। মোট ২০ টি চেয়ারের মাঝে আমাদের দুটো বাদে আর একটি চেয়ারে সুধু মানুষ আছে, এক দম্পতি, একজন আর একজনের সাথে চিপকে শুয়ে আছে।

আমি একটা চেয়ারে বসে পড়লাম হেলান দিয়ে, অন্যটায় মতিন। তখনো রাজু আর আম্মু এসে পৌছুতে পারেনি। দেখলাম রাজ আম্মুর জুতা জোড়া নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছে, আর আম্মু গরম বালুতে হালকা লাফিয়ে লাফিয়ে হাঁটছে। আম্মুর মনোযোগ গরম বালুতে থাকায় ওড়না সামলাতে ভুলে গেছে, তাই বাতসে পাতলা ওড়না উড়ে বুকের অনেকটা অনাবৃত। টাইট কামিজ এর উপর দিয়ে চোখা হয়ে বড় বড় দুটো স্তন সগৌরবে নিজেদের মহিমা প্রকাশ করছে।

“ এই অপু, বসে না থেকে চল সাগরে নামি”

হঠাত মতিন এর কথায় আমি আম্মু আর রাজুর দিক থেকে চোখ সরালাম, বললাম নারে “রোদ আর একটু কমুক, তুই গেলে যা”। কিন্তু মতিন আমার কোন কথা শুনল না, হাত ধরে টেনে আমাকে পানিতে নিয়ে গেলো। আমার কাছে মনে হলো রাজু আর আম্মুকে আমার কাছ থেকে দূরে রাখার জন্যই এটা করছে মতিন।

আমাদের দুজন কে পানিতে নামতে দেখে আম্মু দূর থেকে হাত নেড়ে নেড়ে কি যেন বলার চেষ্টা করছে, কিন্তু আমাদের কানে সেই শব্দ আসছে না। কারন বাসাত বইসে উল্টো দিক থেকে আর এছাড়া সাগর বেশ উত্তাল, শীতের চেয়ে গরম কালে সাগর উত্তাল থাকে বেশি। বুঝতে পারলাম আম্মু আমাদের বেশি দূরে যেতে নিষেধ করছে। আমরা বেশি দূরে গেলাম ও না, আমার কোমর সমান পানি পর্যন্ত নামলাম।

অবশেষে আম্মু আর রাজু আমাদের জন্য নির্ধারিত বিচ চেয়ার পর্যন্ত পৌছুতে সক্ষম হলো, এসেই আম্মু একটা চেয়ারে হেলান দিয়ে বসলো। আর রাজু নিজের ক্যামেরা আম্মুর কাছে জমা দিয়ে এক প্রকার লাফাতে লাফাতে এসে পানিতে নামলো। রাজুর আচরণে আমি বেশ অবাক হচ্ছি। সত্যি বলতে আমি অন্য রকম ভেবেছিলাম। আমি ভেবেছিলাম রাজু সুধু আম্মুর পেছন পেছন ঘুরবে। কিন্তু তেমন কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। এই যে আম্মু কে একা রেখে রাজু চলে এলো আমাদের সাথে। এটা আমি আশা করিনি। এছাড়া হোটেলে পৌঁছুনর পর সেই গোসল কান্ডের পর আমি গিয়েছিলাম বাথরুমে। দেখতে গিয়েছিলাম রাজু কি সত্যি সত্যি আম্মুর ব্রা নিয়ে কিছু করেছে কিনা। কিন্তু অবাক বিষয় তেমন কোন লক্ষন আমি দেখতে পাইনি।

রাজুর এমন আচরন আমাকে বেশ ভাবিয়ে তুলছে। এর মানে দুটো ব্যাপার হতে পারে, এক এটা রাজু আর আম্মু দুজনে মিলে ঠিক করেছে যে আমার সামনে একটু দূরে দূরে থাকবে ওরা। অথবা রাজু নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে, তাই এখন আর ওর আম্মুর প্রতি কোন লালশা নেই। তবে ছোট বেলায় রাজু যেমন আম্মুর নেওটা ছিলো এখনো তাই আছে।

এসব ভাবতে ভাবতে আমি একটু অন্যমনস্ক হয়ে গিয়েছিলাম। হঠাত নিজের মুখের উপর নোনা পানির ঝটকা লাগতেই মি চকিতে ফিরে তাকালাম। দেখলাম রাজু দাঁত বের করে হাসছে। “ কিরে পিচ্চি, তুই তো এবার ঢাকা গিয়ে ভাবুক হয়ে গেছিস, কবিতা তবিতা লিখছিস নাকি”

রাজুর দাঁত বের করা মুখের দিকে আমি ভালো করে তাকালাম, হ্যাঁ এই সেই ছেলে যে আমার আম্মুকে চায়, আমাদের সংসার ভাঙার জন্য এর বড় একটা হাত আছে,হয়তবা এই ছেলের জন্যই আমার আম্মু আমাকে একা একা ঢাকা ফেলে রেখেছে। এছাড়া ছোট বেলা থেকেই আমার এর প্রতি হালকা হিংসে ছিলো,কারন তখন আম্মু নানা বাড়ি এলে এই ছেলেটি আমার প্রতি আম্মুর মমতায় ভাগ বসাতো। অথচ কি সহজ ভাবেই না এই ছেলেটি আমার সাথে দুষ্টুমি করছে, দেখে মনে হচ্ছে গত ছয় মাস আমি যে যন্ত্রণা পেয়েছি তাতে ওর কোন হাত ই নেই। আবার এক পশলা নোনা জল এসে আমার মুখের উপর পড়লো, এবার ও রাজুই মেড়েছে।

হঠাত আমার মনে হলো, আমি চাইলেও ঘটনা বলি আর পরিবর্তন করতে পারবো না। যত বেশি পরিবর্তন এর চেষ্টা করবো তত বেশি খারপ হবে। একবার পরিবর্তন এর চেষ্টা করে আমি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। তাই যা হওয়ার হবে, এই ভেবে আমি ধিরে ধিরে দুই হাত পানিতে ডুবালাম, তারপর সবেগে হাতের তালু দিয়ে পানি ছুড়ে মারলাম রাজুর মুখের দিকে।

“ কবি হলেও তোর মতো, গরু কে শায়েস্তা করার ক্ষমতা আমার আছে “

শুরু হলো আমাদের তিনজনের পানি র মাঝে দাপাদাপি।
দাদা নতুন পর্ব কি আসবে না?
 
মনি দাদার আকাটা ধোনের দাপট পেলাম না। মিনার রোলটা ভালো ছিলো বেশি। শেষে এসে চটি থেকে বাংলা সিরিয়াল হয়ে গেল।
 
এই গল্পের আপডেট কেউ দেও। আর গল্প কোথায় থেকে সংগ্রহ করা।. When will update story come? Update? Update? From where did you collect the story?
 
Last edited:
Back
Top