এরপর আরো কিছুদিন কেটে যায়। সবকিছু স্বাভাবিক ভাবেই চলছিল
একদিন আমার বেশ কয়েকজন বন্ধু মিলে মার্কেটে যাই কিছু কেনাকাটা করতে যাই | হঠাৎই সেখানে গীতার সাথে দেখা হয় | গীতা, আয়েশার সহকর্মী, আয়েশার অফিসের পার্টি তে আলাপ হয়েছিল, তারপর বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে | আমরা একটা খাওয়ার জায়গায় বসে ছিলাম, তো হঠাৎই গীতা সেখানে আসে
“আরে হাসান ভাই, কেমন আছো?? ”
আমি চেয়ার থেকে উঠে ওর দিকে যাই, আয়েশার বন্ধু হলেও আমি ওকে খুব একটা পছন্দ করতাম না, কারণ গীতার কাজই হলো একজনের কথা অন্য জন কে বলা।
“কেমন আছো গীতা, অনেকদিন পর দেখা হয়ে ভালো লাগলো ” আমরা কিছু|
গীতা – আমি ভালো আছি, আচ্ছা একটা কথা বলবো দাদা?
আমি – হ্যা বলো, দাঁড়াও আগে বসে নেই। আমরা কিছুদূর গিয়ে আর একটা বেঞ্চ এর উপর বসলাম।
গীতা – আয়েশা সাথে কি তোমার ঝগড়াটগরা কিছু হয়েছে নাকি !!!
আমি – হঠাৎ এমন কথা বলছো যে আমাদের মধ্যে তো কোনো ঝগড়া হয়নি |
আমার কথা শুনে ও কেমন যেন একটা শয়তানি হাসি দিলো | বুঝতে পারলাম যে ও এমন কিছু একটা জানে আয়েশার ব্যাপারে যেটা আমি জানিনা না, আর আমি যে জানিনা না সেটাই ওর এরকম হাসির কারণ |
গীতা – আমার মনে হয় এ বিষয়ে আমার কিছু বলা ঠিক হবে না, তুমি বরং আয়েশাকেই জিগ্যেস করে নিয়ো| তোমাদের সংসারে ঝামেলা হোক তা আমি চাই না।
আমি একটু অবাক হয়েই জিগ্যেস করলাম “ আজব! তুমি কি ব্যাপারে কথা বলছো আমি তাই বুঝতে পারছি না। আয়েশা কে কিভাবে জিজ্ঞেস করবো। কি বলতে চাইছো একটু খোলাখুলি বলতো| ”
গীতা আমার কানের কাছে মুখ নিয়ে এসে ফিসফিস করে বলতে শুরু করলো, ওর মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছিলো ব্যাপারটা খুব এনজয় করছে ও |
“দেখো আমি জানি তুমি একজন ভালো মানুষ হাসান দা, কিন্তু একজন বন্ধু হিসাবে আমার এটা বলা কর্তব্য তাই বলছি তোমাকে ”
বলেই চারিদিকে তাকিয়ে দেখে নিলো কেও আমাদের কথা শুনছে কিনা |
“কয়েকদিন আগে এখানেই একটা থিয়েটারএ আয়েশা কে অন্য একজন ভদ্রলোকের সাথে ঢুকতে দেখি, সেদিন সকালেই আয়েশা আমাকে ফোন করে জানায় যে ওর শরীর টা খারাপ তাই অফিসে আসতে পারবে না | আমার স্বামী এখানে কিছু কেনাকাটা করতে এসেছিলো তো আমিও অফিসের পর ওর সাথে এসেছিলাম, তখনই ওকে দেখি থিয়েটারএ ঢুকতে " | আমি একটু অবাক হলাম, আয়েশা তো মুভি দেখতে পছন্দ করে না কারণ মুভি দেখা নাকি হারা* ম। আয়েশার পরিবার স্ট্রিক রিলিজিয়াস হওয়ায় ওদের বাসায় মুভির চল টাই ছিল না। আয়েশা পাচ ওয়াক্তি না*মাজি না হলেও কিছু কিছু ব্যাপারে হা*লাল হারা*ম এর ফতোয়া মানতো। তাই আগে আমি ওকে বার বার বললেও ও কখনো রাজি হয়নি | কিন্তু এখান আয়েশার মুভি দেখার কথা শুনে হতবাক হয়ে গেছি।
বুঝতে পারলাম রাজ ছাড়া এটা আর অন্য কেও হতে পারে না |
আমি – “তুমি কি নিশ্চিত যে ওটা আয়েশাই ছিল? ”
গীতা – “একদম নিশ্চিত হাসান দা, তোমার কি মনে হয় আমি আয়েশা কে চিনতে পারবো না? আর তাছাড়া গত দু মাস যাবৎ আয়েশা একটু অন্য রকম আচরণ করছে, এই যেমন আগে তুমি ফোন করলে আয়েশা আমার সামনেই কথা বলতো কিন্তু এখন তুমি ফোন করলে ও একটু দূরে সরে গিয়ে আস্তে আস্তে কথা বলে | বুঝতে পারি না তোমাদের মধ্যেই এতো গোপন কি কথা হয় যেগুলো দূরে সরে গিয়ে চুপি চুপি বলতে হয় ! আরো একটা ব্যাপার, আগে ওকে বার বার বললেও ও ওয়েস্টার্ন ড্রেস পড়তো না, কিন্তু এখন তো রোজ এ ওয়েস্টার্ন ড্রেস স্লীভলেস ড্রেস পরে অফিসে আসে, আর হ্যাঁ সেদিন একটা স্লীভলেস টপ র একটা শর্ট স্কার্ট পরে ওই লোক তার হাত ধরে থিয়েটার এ ঢুকলো |"
ওর কথা শেষ এ হচ্ছিলো না | ওর কথা শুনে নিজেকে খুব বোকা মনে হচ্ছিলো।
“তুমি কি লোকটার একটু বর্ণনা দিতে পারবা?? “
গীতা যে বর্ণনা দিলো তা হুবাহু রাজের এর সাথে মিলে গেলো |
” অলরাইট গীতা, আমার মনে হয় আয়েশা ওর কাজিনের সাথে মুভি দেখতে গেছে, আমি আয়েশার সাথে কথা বলে সিউর হয়ে নিব ”
"কাজিন" গীতা ফিক করে হেসে বললো দাদা আয়েশা স্লিভলেস ড্রেস পড়ে ছিল।
তো কি হয়েছে? নতুন জমানায় স্লিভলেস ড্রেস পড়া কি পাপ। আমিই ওকে একটু আধুনিক হওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছি। আর গীতা তুমিও তো স্লিভলেস ড্রেস পড়েই আছো।
গীতা —" দাদা, তুমি আমাকে ভুল বুঝতেছো। আমি তো অনেক আগে থেকেই এগুলো পড়ি। কিন্তু আয়েশা তো মুস*লিম পরিবারের মেয়ে। মুস্লিম মেয়েরা এইরকম ড্রেস তো স্বাভাবিক না"।
তুমি তো আমার শাশুড়ীর মত কথা বলছো। ওই মহিলার জন্যই আয়েশা এরকম গোড়া। কিন্তু এখন ওকে বুঝিয়ে শুনিয়ে রাজি করিয়েছি। লম্বা লম্বা কাপড়ে পড়ে কি লাভ বল নিজেকে একটু সুন্দর ভাবে রিপ্রেজেন্ট করা উচিত। তোমাদের কোম্পানিতে তো আধুনিক মহিলা ছাড়া কারো বেশি প্রমোশন হয় না।
গীতার সন্দেহ দুর করতে না পারলে এই মেয়ে আরো ঘোট পাকাবে। কিন্তু এইসব অজুহাত দিতেও ভাল লাগছিল না। একটা হি*ন্দু মাদারচোদ আমার বউ কে নিয়ে মজা লুটবে — না মাথা গুলিয়ে যাচ্ছে।
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমি গীতাকে বিদায় করতে চাইছিলাম
"গীতা, আমার বন্ধুরা অপেক্ষা করছে। পরে একদিন আড্ডা দিব নে। আর এসব কথা আর পাচ কান করো না"
অতঃপর আমি আমার বন্ধুদের গ্রুপে ফিরে গেলাম